বিভিন্ন ভাবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও অশ্লীল ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয়-ভীতি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ পরিদর্শকের স্ত্রীর বিরদ্ধে। আর এ অভিযোগের আলোকে এরই মধ্যে ঐ নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা যায়, মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) রংপুর নগরীর ঠিকাদার পাড়া বিকন মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রংপুর মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হোসেন আলী।
গ্রেফতাকৃত নারীর নাম কানিজ ফাতিমা আনিসা, তার স্বামীর নাম হাবিবুর রহমান। তিনি রংপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পরিদর্শক পদে কর্মরত আছেন।
এসময় তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় ও টর্চারসেলে নির্যাতনের অভিযোগে ২ জানুয়ারি রাতে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় এলাকার বাড়ি থেকে শাহারুখ করিম অনিক ও তার স্ত্রী আসমানী আক্তারকে গ্রেফতার করে র্যাব ১৩।
এ ঘটনায় থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলায় আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে কানিজ ফাতিমা আনিসার নাম উঠে আসে।
হোসেন আলী আরও বলেন, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে বিকন মোড় এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রংপুর মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতার আনিসা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পরিদর্শক পদে কর্মরত হাবিবুর রহমানের স্ত্রী।
তবে এ বিষয়ে জানতে হাবিবুর রহমানের মোবাইল নম্বরে কল দিলে তিনি নিজেকে পুলিশ পরিদর্শক পরিচয় দেন। তবে আনিসার ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই নারী তার স্ত্রী নন বলেই ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরীর মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এর আগে সোমবার বিকেলে রংপুর র্যাব-১৩ এর সহকারী পরিচালক মাহমুদ বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেশ কিছুদিন ধরে অনিকের স্ত্রী আসমানী রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে পরিচিত হয়ে কৌশলে তাদের আস্তানায় ডেকে নিয়ে যেতেন। এরপর অনিকসহ অজ্ঞাত চার-পাঁচজন ওইসব ব্যক্তির অশ্লীল ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া এবং হ’ত্যার ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করত। এভাবেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্রটি।
এমন একটি অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১৩ বিষয়টি আমলে নিয়ে সত্যতা অনুসন্ধানের জন্য তাৎক্ষণিক ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং জিম্মিকারী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাবের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাতে রংপুর মহানগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।
এদিকে এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, গ্রেপ্তারে পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন ঐ দম্পতি। আর এ অভিযোগের আলোকে এরই মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর হস্তান্তর করা হয়।