Friday , November 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / মুখে কালি গলায় প্লাকার্ড, ভিন্নধর্মি এক প্রতিবাদ: চাকুরী না পাওয়া যুবকের

মুখে কালি গলায় প্লাকার্ড, ভিন্নধর্মি এক প্রতিবাদ: চাকুরী না পাওয়া যুবকের

বর্তমান বাংলাদেশের একটা সরকারি চাকরি পাওয়া অনেকটা সোনার হরিণের মতো। দীর্ঘ লাইনে থাকে হাজার হাজার লোক চাকরি হয় মাত্র কয়েক জনের। তাও আবার বিভিন্ন জায়গায় শোনা যায় ঘুষ এবং নানা অপকর্মের কথা। কেউবা বলেন মামা খালু না থাকলে চাকরি জোটে না কপালে, কেউবা বলে বাপের টাকা না থাকলে চাকরি জোটে না কপালে। সম্প্রতি মাস্টার্স পাশ করে চাকরি না পাওয়া এক যুবকের ভিন্নধর্মী প্রতিবাদ সাড়া ফেলেছে গণমাধ্যমে। মুখে কালি গলায় প্লাকার্ড ঝুলিয়ে অভিনব পদ্ধতিতে প্রতিবাদ।

হাসান আল সাকিব, রংপুর থেকে পড়ালেখা শেষ করেও চাকরি না পেয়ে রেদওয়ান রনি অরূপে রনি মন্ডল নামে মাস্টার্স কমপ্লিট করা এক যুবক অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে মুখে কালি মেখে নগরীর কারমাইকেল কলেজের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। এরপর জাহাজ কোম্পানি মোড়, প্রেসক্লাব চত্বর হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘুরে আবারও লালবাগে গিয়ে পদযাত্রা শেষ করেন।

এসময় মুখে কালি মেখে প্রশ্ন ফাঁস ও নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত পোস্টার নিয়ে পদযাত্রা করেন রনি। রেদওয়ান রনি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মিঠিপুর ইউনিয়নের একবারপুর দক্ষিণ পাড়া গ্রামের আব্দুল লতিফ মন্ডলের ছেলে।

রনি জানান, ২০১৭ সালে কারমাইকেল কলেজ থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এর আগে রংপুর সরকারি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স করেন।তিন বোন ও এক ভাই তারা।তার বাবা স্থানীয় একটি এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। ২০১২ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। বড় তিন বোনের বিয়ে হয়েছে।বাবা অবসর গ্রহণের পর থেকে সংসারের দায়িত্ব তার কাঁধে এসে পড়ে।

কিন্তু মাস্টার্স সম্পন্ন করেও বিভিন্ন স্থানে চাকরির পরীক্ষা দিলেও আজ পর্যন্ত তা জোটেনি। এ কারণে হতাশ হয়ে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ, প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধসহ দুর্নীতি বিরোধী পোস্টার নিয়ে মুখে কালি মেখে সড়কে পদযাত্রা করেন তিনি।

দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ, টাকার খেলা বন্ধ ও সুস্থ নিয়োগ চালুর দাবি জানিয়ে রনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সকল অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। তবে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ ও নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধে কেন এ নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে প্রশ্ন ফাঁস ও নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ এবং জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের দাবি জানান রনি।

দেখতে কুৎসিত লাগলেও কতটা কষ্ট পেলে মানুষ এমনভাবে প্রতিবাদ করে সে কথা বলার ঊর্ধ্বে। তবে পরবর্তীতে তাকে আর দেখা যায়নি বা তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এখন দেখার বিষয় বাংলাদেশ সরকার অথবা বাংলাদেশের প্রশাসন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা গুলোয় কতটা সক্রীয় ভূমিকা পালন করে। ছেলেটির দাবি মেনে নেওয়া হবে কিনা সে ব্যাপারেও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মুখ থেকে এখনো কোনো কথা শোনা যায়নি। এখন দেখার বিষয় প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন কিনা।

About Ibrahim Hassan

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *