সম্প্রতি ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলছে বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড সারা দেশজুড়ে। সবাই চায় নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জিততে, তাইতো জেতার জন্য করে থাকেন নানান কর্মকাণ্ড। কেউবা জেতার আশায় অসৎ উপায়ের আশ্রয় ও নেয়। সম্প্রতি নোয়াখালীতে এমনই এক ধরনের ঘটনা ঘটেছে যেখানে ভাতিজাকে অসৎ উপায়ে জেতার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন চাচা এমপি। খুব বড় প্ল্যান ও করে রেখেছেন তিনি। নিজের স্টাফদেরকেই বানালেন প্রিজাইডিং অফিসার।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার ৬ নম্বর নাটেশ্বর ইউনিয়নে পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভাতিজাকে জেতানোর জন্য নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ি) আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের মালিকানাধীন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৭ কর্মকর্তাকে একটি ইউনিয়নে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এমন অভিযোগে এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে ৬ নম্বর নাটেশ্বর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনোয়ার হোসেন স্বপন। তার প্রতীক আনারস।
আনোয়ার হোসেন স্বপন অভিযোগ করেন, আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ৬ নম্বর নাটেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৭ জন কর্মকর্তাকে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ি) আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম এমপি। আমার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী কবির হোসেন খোকন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এমপি মোরশেদ আলমের ভাতিজা।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, ইতোমধ্যে ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ আমার দুটি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর এবং তিনটি ক্যাম্পে তালা ঝুলিয়ে দেয় নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। যেগুলো আমি প্রশাসনের সহযোগিতায় খুলতে হয়েছে।
এ ছাড়াও অব্যাহত হুমকি দেয়া হচ্ছে আমার কর্মী সমর্থকদের। তাই এই নির্বাচনে কেন্দ্রভিত্তিক সহিংসতা রোধে একজন সাহসী ও নিরপেক্ষ প্রিজাইডিং অফিসারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এমতাবস্থায় প্রশাসনের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে পারে একজন পক্ষপাতিত্ব লোকের জন্য। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে এটি বড় অন্তরায়। যেহেতু মার্কেন্টাইল ব্যাংক এমপি সাহেবের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান। তাই তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তাগণ কোনোভাবেই উনাদের প্রভাবের বাইরে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যেতে পারবে না। এই জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে মার্কেন্টাইল ব্যাংক, বেঙ্গল ব্যাংক ও মোরশেদ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের কোনো কর্মকর্তাকে নাটেশ্বর ইউনিয়নে কোনো দায়িত্ব না দেয়ার জন্য।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও নাটেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কবির হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কত কথা বলবে। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
এ বিষয়ে জানতে সোমবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে একাধিকবার নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের মোবাইলে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল আলম বলেন, ‘এই রকম একটা লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এটা পরিবর্তনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
বিষয়টি জানাজানির পর পুলিশকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় নড়ে বসেছে প্রশাসন। এটা পরিবর্তনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তা। তোকে অতক্ষণ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে পরীক্ষিত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফোন কল রিসিভ না করায় প্রার্থীর চাচা সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের সাথে কথা বলা যায়নি। তবে এখন দেখার বিষয় শেষমেষ কি হয়।