আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উসকানি মূলক বক্তব্য দিয়ে রীতিমতো বেশ বিপাকে পড়েছেন ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এম সালাউদ্দিন পলাশ। ইতিমধ্যে তার ঐ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে। যেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রকাশ্যে দেখতে পেলেই মারধরের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আনারস প্রতীকের প্রার্থীকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে পেটানো হবে। এই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কেউ কাজ করলে তাকে মশাখালী থেকে উৎখাত করা হবে।’
পঞ্চম ধাপে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মূখী স্কুলের বাজারে নৌকা প্রতীকের পথসভায় এ বক্তব্য দেন তিনি।
ভিডিওতে দেখা গেছে, পথসভায় আরও বক্তব্য দেন মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা কামাল মণি। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে যিনি নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে নির্বাচনের দিন কোনো কেন্দ্রে এজেন্ট রাখতে দেওয়া হবে না।
এদিকে মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আলম অভিযোগ করেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও তার কর্মীরা প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে। তার উপর হামলাও করছে। কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকিও দিচ্ছে।
ফেরদৌস আলম বলেন, নৌকার লোকজন প্রকাশ্যে সিল দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আমি রিটার্নিং আফিসারের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি।
এ বিষয়ে গফরগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এম সালাউদ্দিন পলাশ বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা কাজ করছি। ফেসবুকে ছড়িয়ে পরা ভিডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা রাজনৈতিক বক্তব্য। আসলে এমনটি বলতে চাইনি। উত্তেজনায় মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে।
এ বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোস্তফা কামাল মণির নম্বরে একাধিকবার কল করে তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে ভোটের আগে দলীয় প্রার্থী ও সমর্থকদের এমন বক্তব্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে। দেখা দিয়েছে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা।
গফরগাঁও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শামসুন্নাহার ভূঁইয়া বলেন, সব প্রার্থীকে আচরণবিধি সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ময়মসিংহের গফরগাঁওয়ের ১৫ ইউনিয়নের মধ্যে ১১ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি চারটিতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে যুবলীগ নেতা পলাশের ঐ বক্তব্যকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকাজুড়ে বইছে বেশ শোরগোল। তবে বেশ কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে জানা যায়, তার তাদের পছন্দের প্রার্থীকেই বেঁছে নিতে চান। আর এ জন্য সরকারের প্রতি নিরাপদ ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে নির্ধারিত দিন যেন কোনো অনিয়ম না হয়, এ জন্য রীতিমতো সজাগ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।