নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলছে বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড সারা দেশজুড়ে। সবথেকে বেশি আলোচনায় আসছে নির্বাচনী প্রচারণার ঘটনাগুলো। বিভিন্নভাবে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বীরা চেষ্টা করছে তাদের প্রচারণা আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে, যাতে ভোটারদের ভোট পেতে আরো সহজ হয়। তবে প্রচারণাকে কেন্দ্র করে কিছু প্রার্থীদের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সমালোচনা আলোচনার ঝড় তুলে দিচ্ছে। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীতে, যেখানে নৌকা প্রার্থী বলেছেন নৌকায় ছিল মেরে সেটা ভিডিও করে এনে দেখতে হবে। যেটা সমালোচনার ঝড় তুলে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের এক মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তিনি সেখানে বলেছেন, ভোটকেন্দ্রে গেলে নৌকায় সিল মেরে দেখাতে হবে। নইলে ভোটের মাঠেই ঢুকতে দেওয়া হবে না। যদি তা না পারা যায়, তবে তাদের তালিকা করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আবুল কালাম আজাদ উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। নৌকার এই প্রার্থী গত শুক্রবার রাতে বানেশ্বরে একটি নির্বাচনী কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এই নির্দেশনা দেন। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তার ওই বক্তব্য নিয়ে অন্য প্রার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পঞ্চম ধাপে আগামী বুধবার এই ইউপিতে ভোটগ্রহণ হবে। এখানে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ওই ভিডিওতে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইজা বসে আছেন। কিন্তু আসলে তারা তো বিএনপির ঢাল। তাই আমি বলব, আপনারা খোঁজ রাখবেন। কার বাড়িতে এই স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢুকছে। তার তালিকা করবেন। আমি নির্বাচনের পরে তার ব্যবস্থা নেব।
‘আর যদি তারা ভোটকেন্দ্রে যায়, তাহলে সোজা কথা, নৌকায় সিল মেরে দেখিয়ে দেবে। তাহলে ভোট দিতে দিবে, নইলে ভোটের মাঠে ঢুকতে দিবে না। যদি তা-ও না পারেন, তাইলে ওই ব্যক্তির তালিকা করবেন। আমি বানেশ্বর ওর ব্যবস্থা নিব, ওর বাড়িতে এসে। ওই (স্বতন্ত্র) প্রার্থী কার বাড়িতে ঢুকছে, এটা আমি বলে গেলাম।’
ভিডিওর বক্তব্যের বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ মুঠোফোনে বলেন, তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় এটা বলে ফেলেছেন। পরে এটা ভাইরাল হয়ে গেছে। আসলে এটা রাগে-ক্ষোভে তিনি বলেছেন। আর নেতাকর্মীদের একটু সাহস দেওয়ার জন্যও এটা অনেক সময় বলতে হয়। এ ধরনের কোনো কাজ নির্বাচনে হবে না। তিনি জনগণের ভোটে বিজয়ী হবেন।
নির্বাচনী প্রচারণায় এমন বক্তব্য নতুন কিছু নয়, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ভাইরাল হওয়ার পর তিনি তার ভুল স্বীকার করলেও থেকে যায় অনেকগুলো প্রশ্ন। এমন আচরনের একজন নেতা মানুষের কল্যাণে কি করবে? তবে এ ব্যাপারে প্রশাসন থেকে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়নি। এখন দেখার বিষয় পরবর্তীতে দল থেকে বা প্রশাসন থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় কিনা।