কয়েক দিন আগে বাংলাদেশের উপর দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে ঘিরে সর্বত্র চলছে ব্যপক আলোচনা-সমালোচনা। এবং বাংলাদেশ সরকার নানা ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের করা অভিযোগ অস্বীকার করেছে বাংলাদেশ। অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। এবার এই চিঠি সম্পর্কে বেশ কিছু কথা জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন নিজেই।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর যেখানে প্রায় ১০০ মানুষকে পু/লি/শ মে/রে ফেলে, সেখানে ১০ বছরে বাংলাদেশে ৪০০ জন মা/রা যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপকে ‘হাসির খোরাক’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনকে লেখা চিঠি প্রসঙ্গে রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে র্যাব ও সংস্থাটির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। চিঠির বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দেশে (যুক্তরাষ্ট্রে) তো বহু লোক মা/রা যায়। প্রতিবছরই শ’খানেক লোক পুলিশই মে/রে ফেলে। তো আপনারা ওইগুলোকে বলেন, কিলিং দ্য লাইন অব ডিউটি। আর আমাদের দেশে যখন এমন হয়, তখন এ দেশের পত্রিকা বলে, এটা হয়েছে এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং। দুটোই এক্সট্রা জুডিশিয়াল। কারণ তারাও আইনের পথে যায় না।’ ড. মোমেন বলেন, ‘ওখানেও পু/লি/শ মে/রে ফেলে, এখানেও মে/রে ফেলে। কিন্তু সংখ্যায়, আপনার দেশে তো বছরে হাজারখানেক ম/রে। আর বলছেন এখানে ১০ বছরে ৪০০ লোক মে/রে ফেলেছে। এগুলো তো হাসির খোরাক। মনে হচ্ছে, ওদের এই জিনিসগুলো ঠিক হয়নি। এগুলোই আমরা চিঠিতে লিখেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘উনার (মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী) সঙ্গে যখন আলাপ হয় তিনি তখন ডেমোক্রেসির কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছেন, আমাদের নতুন সরকারের ম্যান্ডেট হচ্ছে মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র। আমরা বলেছি, হ্যাঁ, গণতন্ত্রের কারণেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আমাদের দেশের ভিত্তিটাই হচ্ছে গণতন্ত্র।’ ‘তিনি মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেছেন। আমি বলেছি, আমরা সব সময় এটা নিয়ে সোচ্চার এবং এ নিয়ে আমাদের কোনো কম্প্রোমাইজ নেই। এমনকি র্যাব যেখানে বাজে কাজ করেছে, সেখানে শাস্তি হয়েছে’ যোগ করেন তিনি। ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের আশাবাদ ব্যক্ত করার পাশাপাশি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমন ও মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে র্যাবের ভূমিকার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব ও সংস্থাটির সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপে বাংলাদেশ অসন্তোষ জানিয়েছে। ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে গত ১১ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এ অসন্তোষের কথা জানান পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন মার্কিন এ নিষেধাজ্ঞাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপর নানা ইস্যুকে ঘিরে জরিপ করে থাকে। এবং প্রায় সময় এই সকল জরিপ গুলো বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করে। তবে সম্প্রতি বাংলাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগে বেশ বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ। এমনকি এক অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হয়েছে।