গত মাস খানেক আগেই একটি চিরকুট লিখে এসএসসি পরীক্ষার সুবাদে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় তামান্না আকতার ও অর্পা মল্লিক নামে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার দুই স্কুলছাত্রী। প্রথমত তাদের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি কেউ বুঝতে না পারলেও, অবশেষে দীর্ঘ একমাস পর তাদের উদ্ধারের পর জানা গেল আসল ঘটনা। এদিকে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর গতকাল সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা থেকে ঐ দুই স্কুলচাত্রীকে উদ্ধার করে র্যাব।
বাল্যবিয়ের ভয়ে বাড়ি থেকে পালায় বলে উদ্ধারের পর র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানায় তারা।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) র্যাব জানায়, গত ২৩ নভেম্বর সীতাকুন্ডের ছোট কুমিরা মছজিদ্দা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে গিয়ে ঐ দুই ছাত্রী নিখোঁজ হয়। তারা দুজনই উপজেলার লতিফা সিদ্দিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এ ঘটনার পর দুই ছাত্রীর মায়েরা সীতাকুন্ড থানায় পৃথক দুটি জিডি করেন। নিখোঁজের পর অর্পার বালিশের নিচ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে বলে তখন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন তার মা।
এদিকে নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে ঘটনাটি নিয়ে ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব। তথ্যপ্রযুক্তি ও সোর্সের সহায়তায় গতকাল (রোববার) তাদের অবস্থান কুমিল্লার দেবীদ্বার এলাকায় শনাক্ত করে র্যাব। এরপর রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।
চট্টগ্রাম র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নিয়াজ মোহাম্মদ চপল বলেন, উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদে দুই শিক্ষার্থী জানিয়েছে, বাড়িতে তাদের বিয়ের ব্যপারে কথাবার্তা চলছিল। কিন্তু তারা পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চায়। মূলত বাল্যবিয়ে থেকে বাঁচতে পরিকল্পনা করে দুই শিক্ষার্থী বাড়ি ছেড়েছে। কুমিল্লায় গিয়ে তারা একটি বাসা ভাড়া করে। তাদের একজন বাসাবাড়িতে কাজ করতো এবং অপরজন একটি দোকানে কাজ করতো। উদ্ধারের পর তাদেরকে আজ (সোমবার) পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাল্যবিবাহের ফলে প্রায় প্রতিবছরই অকালে ঝড়ে পড়ছে অগুনিত প্রাণ। তবে এরপরও কেন অভিভাবকরা সচেতন নন, এই প্রশ্নের উত্তর এখনও যেন খুঁজে চলেছেন প্রায় সকলেই। তাই এ ধরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা।