সারাদেশে চলমান ইউপি নির্বাচন কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে শোনা যাচ্ছে সহিংসতার মত খবর। দু’পক্ষের গ্যাঞ্জাম যেন প্রায় জায়গাতেই লেগে আছে। তবে এবার শোনা গেল ভিন্ন রকম আরেকটি খবর। যেখানে হেরে যাওয়ায় নৌকা প্রার্থী তার রাগ সামলাতে না পেরে হামলা করে বসলো দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসারের উপর। সম্প্রতি ভৈরবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এমন ঘটনা ঘটেছে।
ভৈরবের গজারিয়া ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন খান নৌকা মার্কা প্রতীক নিয়ে ভোটে পরাজিত হন। এ কারণে প্রিসাইডিং অফিসারের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া যায়।
রোববার ভৈরবের সাত ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর পর নির্বাচনি সরঞ্জাম নিয়ে গজারিয়ার ইউনিয়নের মানিকদী পুরানগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে উপজেলায় ফিরে আসার পথে সড়কে গাছ ফেলে তাদের পথরুদ্ধ করে। পরে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিনকে উদ্ধার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানালে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে বিজিবিসহ স্টাইকিং ফোর্স ও পুলিশ ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করে। এর পর তাদের উদ্ধার করে উপজেলায় নিয়ে আসেন।
মানিকদী পুরানগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন অভিযোগ করে জানান, নির্বাচনে ভোটে হেরে নৌকার প্রার্থী ভোট গণনা শেষে যখন ফল প্রকাশ করে, তখনই বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করে গোলযোগ সৃষ্টি করে ফল ঘোষণায় বাধা দেওয়া হয়। পরে ফল যখন তার বিপক্ষে যায় তখনই তার সমর্থকরা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ সব কর্মকর্তার ওপর দেশি অস্ত্রসহ লাঠিসোটা দিয়ে হামলা চালায়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ফল সিট ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য তাদের আসার পথে বিভিন্ন সড়কে গাছের গোড়া ফেলে পথ বন্ধ করে রাখে। এমন পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালে তারা এসে পাঁচ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। পরাজিত প্রার্থীর হামলায় আহত হন সহকারি প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সুমন খান ও মিজানুর রহমান। পরবর্তী উপজেলা এসে নির্বাচনি সরঞ্জামসহ ফল সিট নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিকট হস্তান্তর করা হয় বলেও জানান তিনি।
এরকম ঘটনা আসলেই মেনে নেওয়া যায় না। নির্বাচনে হারার রাগ বেশীরভাগ সময়ই দেখা যায় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর দিয়ে প্রবাহিত করা হয়। কিন্তু এটা কেমন কথা ভিতরে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার দের উপর হামলা। পুলিশকে অভিযোগ জানালে পুলিশ এসে গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ব্যাপারে পরবর্তীতে পুলিশ সেই হেরে যাওয়া প্রার্থীর বিপক্ষে কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা সে ব্যাপারে কিছুই জানা যায়নি।