দীর্ঘ দিন ধরে শারীরিক ভাবে নানা ধরনের জটিলতায় ভুগছেন বেগম খালেদা জিয়া। সম্প্রতি তার শারীরিক অবস্থার আরও মারাত্মক অবনতি হয়েছে। এবং তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতেল চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই। গতকাল শরীরের অনেকগুলো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। আজ রিপোর্ট পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেবেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। এখন প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় দুবার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বৈঠকে বসছেন। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পর্যালোচনা করে প্রতিদিনই ওষুধ দিচ্ছেন তারা। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের শরীরের বিভিন্ন প্যারামিটার নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। সেগুলো ওপরে উঠানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। কয়েক দিন ধরেই কমে যাচ্ছে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা। রক্ত কিংবা ওষুধ দিয়ে তার মাত্রা বাড়ানো হচ্ছে। অতিরিক্ত রক্তও আর দেওয়া যাচ্ছে না তাকে। এতে পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ বেড়ে যাচ্ছে। ডা. জাহিদ বলেন, বর্তমান চিকিৎসায় খালেদা জিয়ার সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম। বরং তাঁর শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।
যত দিন যাচ্ছে তাঁর স্বাস্থ্যঝুঁকি ততই বেড়ে যাচ্ছে। এখন তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সরকার তাঁকে বিদেশে যেতে অনুমতি দিচ্ছে না। গত ১৩ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান। এই হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন আহমেদ তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড তাঁর চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছেন।
এদিকে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিএনপি দল এবং বেগম জিয়ার পরিবারের লোকেরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বর্তমান সরকারের কাছে। অবশ্যে সরকার অনুমতি দেয়নি। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সাজা প্রাপ্ত আসামী হিসেবে অন্যান্যদের তুলনায় বেগম জিয়া বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।