যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি সংস্থা রয়েছে। এরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নানা বিষয়ের উপর জরিপ করে থাকে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাচারকৃত অর্থের পরিমান জানিয়েছে। এতে করে প্রকাশ্যে উঠে এসেছে বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত গত ৬ বছরে মোট অর্থের পরিমান।
২০১৪ সালের হিসাব বাদে ২০০৯ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে প্রতিবছর গড়ে পাচার হয়েছে ৮২৭ কোটি ডলার। গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। জিএফআই’র প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ২০১৪, ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের তথ্য-উপাত্ত দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া ২০১৫ সালের পর থেকে জিএফআই’র প্রতিবেদনে বাংলাদেশের কোনো তথ্য নেই। ওই প্রতিবেদনে দুটি প্রক্রিয়ায় অর্থ পাচারের কথা বলেছে জিএফআই। এর মধ্যে একটি বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির মূল্য বেশি দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং)। অপরটি রফতানিতে মূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং)। ২০০৯ সালের পর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মূল্য ঘোষণায় গড়মিল দেখিয়ে অর্থ পাচারের পরিমাণ বেড়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।
উন্নয়নশীল ১৩৪ দেশ থেকে বাণিজ্যের আড়ালে এক দশমিক ছয় ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি (১ ট্রিলিয়নে ১ লাখ কোটি) ডলার পাচার হয়েছে বলে জিএফআই’র প্রতিবেদনে উঠে আসে। এতে ১৩৪টি উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশের গত ১০ বছরের (২০০৯-২০১৮) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মূল্য ঘোষণার গড়মিল দেখিয়ে কীভাবে দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়, সেই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি ৩৬টি উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনামূলক চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, আমদানি-রফতানিকারকরা পণ্য আমদানি-রফতানির সময় প্রকৃত মূল্য না দেখিয়ে কমবেশি দেখানোর মাধ্যমে অর্থপাচার করে। প্রতিবেদনে দেয় সময়কালীন সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার করা হয়েছে চীন থেকে। এরপরই আছে পোল্যান্ড, ভারত, রাশিয়া ও মালয়েশিয়া।
এক শ্রেনীর সুবিধাবাদী ব্যক্তি রয়েছে যারা কিনা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় নানা অনিয়মের মধ্যে দিয়ে বিপুল পরিমানের অর্থ উপার্জন করছে। এই সকল উপার্জিত অর্থ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার করছে। এতে করে দেশ ও জাতি নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এমনকি দেশের উন্নয়নও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।