একটা সময় ছিল না কিছুই, কোনো ভাবেই দু-বেলা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো তার। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এখন ছয়-ছয়টি দোকানসহ অঢেল সম্পতির মালিক মো. মিন্টু আলম খান। আর এ সবের জন্য তিনি বেঁছে নেন অবৈধ পন্থা। এছাড়াও জানা গেছে, বর্তমানে তিনি মোহাম্মদপুর কাঁটাসুর কাঁচাবাজারের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন। আর সম্প্রতি এ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
জানা যিনি মোহাম্মদপুর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবের হাত ধরে বাজারের ছয়টি দোকানের মালিকের পাশাপাশি হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। বাজারে স্থান বাড়ানোর জন্য ৩ কাঠা জমি কেনার কথা বলে কিনেছেন মাত্র এক কাঠা জমি। তবে পূর্বের কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি টাকা উদ্ধারে দায়ের করেছে একটি মামলা।
কাঁটাসুর কাঁচাবাজার দোকান মালিক ব্যাসায়ী কল্যাণ সমিতি, ২০১৫-১৯, চার বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন মো. মিন্টু আলম খান। ছিলেন বিতর্কিত কাউন্সিলর রাজিবের ছত্রছায়ায়। পান দোকানদার থেকে এখন তিনি বাজারের ছয়টি দোকানের মালিক। কথিত আছে নিজ গ্রামে আরও সম্পদ গড়েছেন, তবে ঢাকায় থাকেন বস্তিঘরে।
বাজারে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ অবশ্য অন্য কারণে। বাজার সংস্কারের কথা বলে জমি কেনার নামে ১৩০ জনের কাছ থেকে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা করে নিয়ে এখন তিনি লাপাত্তা। তিন কাঠা জমি কেনার কথা থাকলেও কিনেছেন এক কাঠা। ফলে ব্যবসায়ীরাও তাদের দোকান বুঝে পাননি।
বর্তমান কমিটির সদস্যরা জানান, টাকার ব্যাপারে মিন্টুর সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা ফেরত না দিয়ে কালক্ষেপণ করেন। ফলে ক্ষতিগ্রস্তরা মামলা করতে বাধ্য হন।
কাঁটাসুর কাঁচাবাজার দোকান মালিক ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জামান খান খলিল বলেন, হিসাব চাইলে আজকে দিই, কালকে দিই। কিন্তু ওদের যে সভাপতি আছেন, তিনি বলেছেন আমরা সব হিসাব দিয়ে দেব। এই মামলায় কী হইব, এটা দুই টাকার মামলা। মামলা শেষ করতে লাগে তিন লাখ। তিন লাখে মামলা শেষ করে আইসা পড়ব।
অভিযোগের ব্যাপারে অবস্থান জানতে মিন্টুর বাসায় যেয়ে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রীর দাবি মিন্টু নির্দোষ, রাজীবের সঙ্গে রাজনীতি করায় প্রতিহিংসার স্বীকার তিনি।
মিন্টুর স্ত্রী বলেন, আমাদের ছয়টি দোকান। জমি কেনার কথা বলে টাকা নিলে আমরা এই বাসায় থাকি বস্তি বাসায়? মিন্টুর ছেলে ও স্ত্রী ক্যামেরার সামনেই অভিযোগকারীদের নানাভাবে হুমকি দেন। একপর্যায়ে ক্যামেরার ওপর চড়াও হন তারা।
বর্তমান কাউন্সিলন জানান, রাজিবের কারণেই বেপরোয়া মিন্টু। টাকা উদ্ধারে কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও মিন্টুর কারণেই সমস্যার সমাধান হয়নি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ বলেন, নতুন কমিটি বলছে আমরা এত টাকা এখনও হিসাবে পাই, পুরান কমিটি বলছে- আমাদের কাছে টাকা নেই। তারা টাকা নিয়েছে, কিন্তু তারা বলতে পারছে না টাকাটা কোথায় গেছে। এখানে দুর্নীতি কিছু একটা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। প্রতারণার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে ঐ সকল অর্থ ফিরে পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা। সম্প্রতি এ ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।