কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রমাগত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে। ফলে রিজার্ভ সংকটে রয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ৯ দিনে ১৩টি দেশি-বিদেশি ব্যাংকে একটি রেমিট্যান্সও আসেনি। যদিও অন্যান্য ব্যাংকে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৩ কোটি ১৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে এ চিত্র দেখা যায়।
যে ১৩টি দেশি-বিদেশি ব্যাংক রেমিটেন্স পায়নি তার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বেসরকারি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), বেসরকারি কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক। এবং শিমন্ডা ব্যাংক। বিদেশী ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে রয়েছে আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাঙ্ক, ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাঙ্ক।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি ফেব্রুয়ারির প্রথম ৯ দিনে এসেছে ৬৩ কোটি ১৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১১০ টাকা) যার পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে ৭ কোটি ডলার বা ৭৭০ কোটি টাকা আসছে।
আলোচিত সময়ে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ৯০ লাখ ৯০ হাজার ডলার, দুটি বিশেষায়িত ব্যাংক থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৩ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
বরাবরের মতো এবারও রেমিটেন্সের শীর্ষে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক। তবে ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মধ্যে ৪টিই দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেনি।
জানুয়ারিতে ২১০০ মিলিয়ন ডলার বা ২৩ হাজার ১০০ মিলিয়নের বেশি রেমিটেন্স এসেছে। আর বিদায়ী বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে এসেছে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার ডলারের বেশি ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
এর আগে 2020 সালে হুন্ডি বন্ধের কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল। বিদায়ী 2022-2023 অর্থবছরে, প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে 2,161 মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স প্রেরণ করেছে। এটি এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনার সময় ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪৭৭ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।
বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিয়ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে। গত আড়াই বছরে রিজার্ভ অর্ধেকে নেমে এসেছে। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ২৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
এদিকে ডলারের হার নিয়ন্ত্রণ ও বাজারভিত্তিক করতে যত দ্রুত সম্ভব ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে ক্রলিং পেগ সিস্টেম ব্যবহার করে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করা হবে।