দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেউ জয়ী হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা। তারা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিততে পারেনি। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নিজেকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচন: প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে রাষ্ট্রচিন্তা। প্যানেলিস্টরা এই নির্বাচনের প্রভাব এবং প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, গত ৭ জানুয়ারি বাকশালে রাষ্ট্রীয় সহায়তায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এক সময় বামরা বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করবে না এটা নিষিদ্ধ ছিল। ইদানীং এই ট্যাবু কিছুটা ভাঙছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই।
এখন যা দরকার তা হলো আন্দোলন, আন্দোলন ও আন্দোলন।
কথাসাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে এটা ঠিক নয়। আমরা কেবল মাত্র শুরু করেছি. এই প্রথম বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হলো। এই লড়াই সহজ হবে না। কিন্তু জয় আমাদের জন্য অনিবার্য। হতাশার কারণ নেই। রাষ্ট্রচিন্তা ও গণতন্ত্র ফোরামসহ সব বিরোধী দলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। লেখক রাখাল রাহা বলেন, আপনার কর্মসূচি অন্য কেউ বাস্তবায়ন করবে, এই দিবাস্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জনগণ এই ডামি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদকে ডামি আন্দোলন দিয়ে পরাজিত করা যাবে না।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইমুম রেজা পিয়াস বলেন, বৈশ্বিক পরাশক্তির প্রতিযোগিতা থেকে আমাদের সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা নানাভাবে বিভক্ত। বিভক্ত হয়ে আমরা লাভবান হতে পারি না। এতে আওয়ামী লীগ লাভবান হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোসরেকা অদিতি হক বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভোটের কোনো মানে হয় না। কোন অধিকার নাই. বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনে জনগণ কেন সাড়া দেয়নি, তার মনস্তত্ত্ব রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে। সমালোচনামূলক চিন্তার পরিধি ক্রমশ সংকীর্ণ হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ধ্বংস অনিবার্য।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আল রাজীর সভাপতিত্বে ও আইন গবেষক লোকমান বিন নূরের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসির উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক সেলিম খান, রাজ্য সংস্কার আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদুল হক, ইমরান ইমন, হাসিব উদ্দিন হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব গোলাম শফিক প্রমুখ। সভায় বক্তব্য রাখেন। .