জীবিকার সন্ধানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে যাওয়ার যাওয়ার পর সেখানে সড়ক দুর্ঘটনায় কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের খিজমত আলী। ২০১৭ সালে ওই দুর্ঘটনায় ছয় মাস ধরে তিনি সেখানকার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে থাকার পর খিজমতকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। তবে খিজমত আলীর দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য আইনি পথ বেছে নেয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কল্যাণ মন্ত্রণালয়। চার বছর ধরে এই বিচার কাজ চলার পর ওমানের একটি আদালত খিজমত আলীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। গতকাল (মঙ্গলবার) অর্থাৎ ১৪ ডিসেম্বর বিকেলের দিকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ভবনে মন্ত্রী ইমরান আহমেদ খিজমত আলীর নিকট ১ কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার ৯২২ টাকার একটি চেক হস্তান্তর করেন।
একই সঙ্গে ইমরান আহমেদ বলেন, আমাদের দেশের কোনো প্রবাসী শ্রমিকের টাকা বিদেশে পাওয়ার ব্যবস্থা থাকলে আমরা অনেকের বীমা বা ব্যাক-আপের বকেয়া আদায় করার চেষ্টা করি। আমাদের লেবার গোয়িং যেটা হয় সেটা কিন্তু মূলত তাদের কাজ; তারা যে কল্যাণমূলক কাজ করে আমরা তার পরিপ্রেক্ষিতে কাজ করি।
ওমানে খিজমতের দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১ কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার ৯২২ টাকা আ’হত খিজমত আলী পেয়েছেন তার কর্মস্থলের মাধ্যমে। মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে সেখানে আদালতে বিষয়টা সুরাহা হয়েছে। এর জন্য প্রায় চার বছর সময় লেগে গেছে। গত নভেম্বরে এই অর্থ দূতাবাসের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আসে।
খিজমত আলীর ছোট ছেলে আমির হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানান, তার বাবা ২০১২ সালে ওমানে যান। সেখানে ফল প্যাকেজিং কাজের পাশাপাশি কৃষিকাজ করতেন। তবে কর্মস্থল থেকে চা খেতে গেলে রাস্তায় একটি গাড়ি এসে তার বাবাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়।
আমির হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার সময় আব্বু আমার মায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। আর ওইসময় আব্বু দুর্ঘটনা করেন। পরে যিনি আব্বুকে হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি আমাদের ফোন করে দুর্ঘ’টনার খবর জানান।
আমির হোসেন জানান, এরপর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি টানা। আমার আব্বু ছয় মাস ধরে হাসপাতালের আইসিইউতে ছিল। ছয় মাস পর তার জ্ঞান ফিরে আসে। এরপর আমরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাবাকে দেশে এনে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে ভর্তি করি।
আমির বলেন, তার বাবার সুস্থতার জন্য এখনও বিভিন্ন ধরনের থেরাপি ও ম্যাসাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। টাকার অভাবে আমার আব্বুর সঠিকভাবে চিকিৎসা করানো সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি। এখন ক্ষতিপূরণ পাওয়া গেল তাই আমার বাবার চিকিৎসা বেশ ভালোভাবেই করা যাবে। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে মো. আহমেদ মুনীরুশ সালেহীন যিনি প্রবাসী কল্যাণ সচিব হিসেবে রয়েছেন তিনি, হামিদুর রহমান যিনি ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে রয়েছেন তিনি, পরিচালক (অর্থ ও কল্যাণ) শোয়েব আহমেদ এবং খিজমত আলীর স্ত্রী ও তার দুই সন্তান এই চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এই চেক পাওয়ার পাওয়ার পর আশার আলো দেখছেন তিনি।