টাঙ্গাইলের সখীপুরে অপহরণের দুই দিন পর সামিয়া আক্তারের (৯) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার দারিয়াপুর উত্তরপাড়ায় শিশু বাড়ির পাশের একটি ঝোপ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। শিশুটির মামা আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার সকালে সামিয়াকে অপহরণের পর অডিও বার্তায় পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। শিশু সামিয়া উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকার রঞ্জু মিয়া ও রুপা বেগমের মেয়ে। সে ওই গ্রামের মাঝিরচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
অপহৃত সামিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সকাল ৮টার দিকে সামিয়া বাসা থেকে এক কিলোমিটার দূরে এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। পড়াশোনা শেষে সহপাঠীদের নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথের একটি দোকানে তার সহপাঠীরা কিছু কিনতে থামলে সামিয়া একা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
এদিকে সামিয়ার বাড়ি ফিরতে দেরি হয়েছে দেখে তার মা রুপা বেগম শিক্ষিকাকে ফোন করে জানতে পারেন, সে অনেক আগেই পড়া শেষ করে চলে গেছে। পরে রুপা বেগম তার মেয়েকে খুঁজতে বের হলে বাড়ির পাশের একটি জায়গায় তার ব্যবহৃত জুতা পড়ে থাকতে দেখেন। কিছুক্ষণ পর তার মোবাইল ফোনের আইএমও-তে একটি অডিও বার্তা আসে, যেখানে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অডিও বার্তায় হুমকি দেওয়া হয়েছিল যে মেয়েটি বিষয়টি পুলিশকে জানালে তাকে হত্যা করা হবে। বিষয়টি সামিয়ার বাবা রঞ্জু মিয়া থানায় জানালে পুলিশের একাধিক ইউনিট সামিয়াকে উদ্ধার করতে থাকে।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সামিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তার বাবা রঞ্জু মিয়া মুঠোফোনে বলেন, আমি থানায় মামলা করেছি। পুলিশ নানাভাবে আমার মেয়েকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে। বিষয়টি জানাজানি হলে অপহরণকারীরা তার মেয়েকে হত্যা করবে বলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং এ বিষয়ে রিপোর্ট না করার অনুরোধ জানান।কিন্তু বেলা ১টার দিকে সামিয়ার চাচা আমিনুল ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান, সামিয়ার লাশ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শরফুদ্দিন ও সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, পুলিশ মেয়েটিকে জীবিত উদ্ধারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। এখন তার লাশ উদ্ধারে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। যেই দোষী তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে।