পুরান ঢাকার লালবাগের নবাবগঞ্জ বাজারে সপ্তাহজুড়েই তুলনামূলক কম দামে গরুর মাংস পাওয়া যায়। তুমুল হৈচৈ করে মাংস বিক্রি করছেন দোকানিরা। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ব্যানারও টাঙানো হয়েছে। কেউ কেউ হাতের মাইকে গ্রাহকদের ডাকছেন। দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত চারটি দোকানে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। আশেপাশের দুটি দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়। নবাবগঞ্জ বাজার থেকে বেরিয়ে নবাব বাগান মসজিদের পাশে আরেকটি দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায় মাংস। তবে রাত ১১টার পর দোকানে মাংস বিক্রি শেষ হয়ে যায়।
অন্যদিকে রাজধানীর নিউমার্কেট, কাটাবন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের মতোই গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭শ’ থেকে ৭৫০ টাকায়। এসব দোকানদারদের দাবি, মাংসের গুণগত মান বিবেচনায় দাম বাড়ে। যে কারণে দামে এমন পার্থক্য রয়েছে।
নবাবগঞ্জ বাজারের মাংস বিক্রেতা নাদিম হোসেন জানান, রাজধানীর অন্যান্য বাজার থেকেও মাংস আসে। সেখান থেকে মাংসও বিক্রি করি। মানের কোন পার্থক্য নেই। তার দোকানে মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা দরে।
দাম কমার কারণ জানতে চাইলে পাশের আরেক দোকানদার ফারুক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাজারে গরুর মাংস ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। একটি সিন্ডিকেট গঠন করা হয়। যার কারণে বাজারে বিক্রি অর্ধেক কমে গেছে। এ কারণে খামারে গরু বাড়ছে। স্থান পাওয়া যায় না. বর্তমানে খামারে গরু কমাতে বাধ্য হচ্ছেন খামারিরা। যার কারণে মাংস কম পাওয়া যাচ্ছে।
আজিমপুর এলাকার বাসিন্দা ইসমাইর হোসেন জানান, কম দামে মাংস পাওয়া যায়। গতকাল এক কেজি কিনলাম ৫৫০ টাকায়। আজ আবার এলাম। ৪ /৫ কেজি কম হওয়ায় জমে যেতে চেয়েছিল। অবশ্যই, দোকানে মাংস ফুরিয়ে গেছে। এখানে (নবাবগঞ্জ বাজারে) বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা দরে।
এই ক্রেতা বলেন, এসব মাংসে সমস্যা আছে, দেখার সুযোগ নেই। বড় বড় টুকরো করে ঝুলছে। এই টুকরা চর্বি বা হাড়ের টুকরা দিয়ে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে এই টুকরোগুলোর ওজন দুই কিলোগ্রামের বেশি। এক কেজি কিনতে চাইলে তাদের পছন্দ মতো নিতে হবে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
ভোক্তারা বলছেন, চলমান মূল্যস্ফীতির কারণে অনেকের খাবার থেকে মাংস বাদ পড়েছে। অন্যদিকে ভারত থেকে হাড়বিহীন বা হিমায়িত মাংস আমদানি করা হচ্ছে। তবে ডলার-সংকটের কারণে আমদানি কমেছে। এসব কারণে মাংসের চাহিদা কমে গেছে। খামারে গরুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা মাংস কম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।