ড. বেনজীর আহমেদ হলেন বাংলাদেশের পুলিশের মহাপরিদর্শক। এই সম্মানীয় পদে অধিষ্ঠিত হবার পর থেকে তিনি সততা ও নিষ্ঠার সহিত তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। পুলিশের মহাপরিদর্শকের দায়িত্ব গ্রহণ করার পূর্বে তিনি র্যাবের মহাপরিদর্শক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এছাড়াও তিনি ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশের প্রধানও ছিলনে। সম্প্রতি আইজিপি তার এক বক্তব্যে বলেছেন গত ৩০ বছর আমরা গণতন্ত্রের দেখা পাইনি।
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও গত ৩০ বছরে গণতন্ত্র দেখিনি। তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। যারা দেশকে অপমান করেছে তাদের গাড়িতে আমরা বাংলাদেশের পতাকা দেখেছি।
রোববার বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের সংকলিত ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’ গ্রন্থের সংশোধিত ও পরিমার্জিত দ্বিতীয় সংস্করণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, গত শতাব্দীর দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মহাত্মা বঙ্গবন্ধুর আবির্ভাব ও মুক্তিযুদ্ধ। এ দুটি ঘটনা আমাদের চার হাজার বছরের ইতিহাসকে বদলে দিয়েছে। যতদিন এ জাতি থাকবে ততদিন এ দুটি ঘটনা অনুরণিত হবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু গত ৩০ বছরে গণতন্ত্র দেখিনি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। যারা দেশকে অপমান করেছে তাদের গাড়িতে আমরা বাংলাদেশের পতাকা দেখেছি।
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের অনুকরণীয় অবদানের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ ছিল ব্যাপক ও বিশাল। বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী ছিল বাঙালি পুলিশ, কারণ তারা জানত কী ধরনের বঞ্চনা তাদের ভোগ করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের অনন্য অবদানের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, বাঙালি পুলিশ সশস্ত্র প্রশিক্ষণ, গুলি ও অস্ত্র দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময় জনগণকে সহায়তা করেছে। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ বেড়েছে। মুক্তিযুদ্ধ এখন জনযুদ্ধে পরিণত হয়েছে। যতদিন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের কথা বলা হবে ততদিন পুলিশের বীরত্বের কথা প্রকাশিত হবে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে পুলিশের রক্তের ইতিহাস রয়েছে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৬ কোটি মানুষের ৩২০ মিলিয়ন হাত নিয়ে আজ আমাদের মাথাপিছু আয় ৩০০০ ডলারের উপরে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগে বিশ্বের অনেক বৃহৎ অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বৃদ্ধি স্থিতিশীল ছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা তাজা রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন বলেই এসব সম্ভব হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর নিপীড়ন-নির্যাতনের কথা তুলে ধরে আইজিপি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বর্বরতা ভুলে গেলে আমরা আমাদের অস্তিত্ব ভুলে যাব। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে কোনো আপস নেই। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, পুলিশ হলো জনগনের পরম বন্ধু। সমাজ ও সমাজে বসবাসরত মানুষের সার্বিক নিরাপত্তার নিশ্চতা নিশ্চিত করে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। তারা তাদের নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অপরাধকারীদের মোকাবেলা করেন এবং তাদের গ্রেফতার করে যথাযথা শাস্তির ব্যবস্থা করেন। পুলিশের এই দুর্দম সাহসের জন্য বাংলার মানুস তাদের কাছে চির ঋণী থাকবে।