দীর্ঘদিন আড়ালে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর শরিফুল হক ডালিম (বীর বিক্রম) প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের লাইভ টকশোতে অংশ নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত এই সাবেক সামরিক কর্মকর্তা লাইভে তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এবং ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালের পটভূমি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন।
রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে ইলিয়াস হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত “বিশেষ লাইভে যুক্ত আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর ডালিম (বীর বিক্রম)” শীর্ষক এই টকশো মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
মেজর ডালিম টকশোতে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীনই তিনি এবং অন্যরা বুঝতে পেরেছিলেন, এই যুদ্ধ কাদের স্বার্থে হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের প্রভাব এবং সাত দফার চুক্তি তাঁদের ভবিষ্যৎ স্বাধীনতা নিয়ে সংশয়ে ফেলে। তাঁর ভাষায়, “আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হব, নাকি ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হব—এই প্রশ্ন তখন থেকেই দেখা দিয়েছিল।”
মেজর ডালিম ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে ‘বৈপ্লবিক সামরিক অভ্যুত্থান’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। এর সূত্রপাত মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় থেকেই হয়েছিল।” তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকে স্বৈরাচারী বলে অভিহিত করেন এবং দাবি করেন, “মুজিবের মৃত্যুর পর মানুষ আনন্দ মিছিল করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “১৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে দুই পক্ষেই প্রাণহানি ঘটেছিল। তবে বিপ্লবীরা বিজয়ী হয়েছিল এবং ক্ষমতা নিজেদের হাতে নেয়।”
বর্তমান প্রজন্মের বিপ্লবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “তোমাদের বিপ্লব সফল করতে আমরা প্রস্তুত। আমাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে যতটুকু পারি সহযোগিতা করব। তোমরা শক্তিশালী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলো।”
জাতীয় সঙ্গীত প্রসঙ্গে মেজর ডালিম বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ভিনদেশী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবর্তে কাজী নজরুল ইসলাম বা অন্য কোনো দেশীয় কবির লেখা হতে পারত। তিনি এটিকে পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেন।
এই টকশোতে মেজর ডালিমের বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং ১৫ আগস্টের ঘটনা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে।