পিতা-মাতার পরে শিক্ষকের অবদান। সু-শিক্ষায় শিক্ষিত ও সুন্দর একটা জীবন গড়ার কারিগরের দায়িত্ব পালন করেন একজন শিক্ষক।লেখা পড়ার পাশাপাশি সমাজের ন্যায় অন্যয় ভালো মন্দ সব কিছু বিবেচনা করার শিক্ষাও দিয়ে থাকেন তারা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে একজন শিক্ষকের অসামাজিক কর্মকাণ্ড সংবাদ মাধ্যম ও যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়।
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে( Ranishankaile ) এক শিক্ষকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে পাঁচ দিন ধরে অনশন করছেন তার এক ছাত্রী। গত বৃহস্পতিবার৩ মার্চ থেকে বিয়ের দাবিতে ওই শিক্ষকের বাড়িতে অনশন শুরু করে ওই ছাত্রী। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা রাণীশংকৈল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম রানীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর।
অন্যদিকে শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে গত শনিবার স্কুলের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামে। তারা এখনও শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছেন। সহপাঠীদের প্রতি অবিচারের সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়, শিক্ষা অফিস ও থানা ঘেরাও করে। তারা ইউএনওর কাছে স্মারকলিপি দিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
অনাহারে থাকা ওই শিক্ষার্থী বলেন, তিন বছর ধরে কম্পিউটার অপারেটর তৌহিদুলের সঙ্গে প্রেম করছি। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে একাধিকবার শা’রীরিক সম্পর্ক করেছে। এখন সে আমাকে এড়িয়ে চলে। অন্যত্র নিজের বিয়ে ও ঠিক করেছেন। আমি আমার অধিকার আদায়ের জন্য পাঁচ দিন ধরে তৌহিদুলের বাসায় অবস্থান করছি। তৌহিদুলের পরিবার আমাকে বাড়ি থেকে বের করার চেষ্টা ও করছে। উনি আমাকে বিয়ে না করলে আমি এই বাড়ি ছেড়ে যাবো না।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের সহপাঠীদের প্রতি সুবিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আজ ৫ দিন হয়ে গেছে এখনও কোন সমাধান পাওয়া যায়নি। আমরা চরিত্রহীন শিক্ষকদের কঠোর শাস্তি চাই। যাতে কোনো শিক্ষক তার শাস্তি দেখে ছাত্রছাত্রীদের দিকে তাকাতে না পারে। লম্পট তৌহিদুলকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
অভিযুক্ত কম্পিউটার অপারেটর শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের( Touhidul Islam ) সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
রানীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা( Sohail Rana ) বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পরে ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন,আমরা অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার( Sohail Sultan Zulkar ) নাইন কবির বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাকে স্মারকলিপি দিয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঠাকুরগাঁওয়ের সহকারী পুলিশ সুপার (রাণীশংকৈল সার্কেল) মো. তোফাজ্জল হোসেন( Md. Tofazzal Hossain ) বলেন, শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের( Touhidul Islam ) বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে( In Bangladesh ) ঘটে যাওয়া নানা ধরনের শ্লী’লতাহানির ঘটনা সবার সামনে দৃষ্টান্ত । তবে এই সকল অপকর্মের সাথে যদি দেশে উচ্চ সমাজের ব্যক্তিরা জড়িত থাকে তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানুষ কি শিখবে? এমনি মন্তব্য করেছেন সাধারণ মানুষ। বিগত কয়েক বসর ধরে শিক্ষকদের করা নানা অপকর্মের ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে। অনেকে শাস্তি ও দিয়েছেন আদালত । তবে তাদের শাস্তির বিষয়ে অবগত হয়েও এমন অপরাধ মূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।