সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মাদ রাশেদ এর না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার পরে কেটে গেছে বহু দিন তবে এখোনো সিনহাকে ভুলতে পারেনি মানুষ অনেকেই এখোনো সেদিনের ঘটনা ভুলতে পারেনি। এ প্রসঙ্গে সিনহার বোন বলেন, ৩৬ বছর সে বেঁচে ছিলেন, তিনি কেবল আমার ভাই ছিলেন। কিন্তু তার মৃত্যুর পর তিনি এখন সকল জাতির ভাই। সবাই তাকে ভালোবাসে। দেশের সব মানুষ বিচার চাইছে।
এখনও অনেকেই আমাদের খোঁজ করেন। মনে হচ্ছে সবাই আমার পাশে আছে। আমি মনে করি আমি কার্যে রায় দেখতে পাচ্ছি। ‘ এসব কথা বলছিলেন নিহত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস।
সিনহার মৃত্যুর দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় । শোকার্ত কণ্ঠে তিনি বলেন, প্রাণবন্ত যুবক সিনহাকে হারিয়ে পরিবার দীর্ঘদিন শোক কাটেনি। তবে এখন তারা তাকে নিয়ে বেশি গর্বিত।
“আমার ভাই বলতেন যে প্রতিটি মানুষ পৃথিবীতে এসেছে একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছেন। কাজ করার পরে, সবাই চলে যায়। তাঁর সে কথায় এখন আমার মনে হয়, একটি জনপদের নিপীড়িত মানুষকে মুক্ত করতে সে নিজে পৃথিবীতে এসেছে। নিজের আত্মত্যাগের মাধ্যমে মুক্ত করে গেছে। আমার ভাই এখন হিরো’—বলেন শারমিন- তার মতে, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের নামে আসামিরা টেকনাফ এলাকায় নিপীড়নের রাজত্ব কায়েম করেছে।অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। সিনহার মৃত্যুর পর প্রকাশ্যে এসেছে দুর্নীতিও।
শারমিন জানান, ঘটা করে মৃত্যুর দিবস পালন করেন না তাঁরা। প্রায়ই তারা বিভিন্নভাবে সিনহার জন্য দোয়ার আয়োজন করে। এছাড়াও তিনি গরিবদের জন্য এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান করেন। গতকাল বনানীতে কবর জিয়ারত করতে যান স্বজনরা। বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠী, আত্মীয়-স্বজনসহ অনেকেই খোঁজ নিচ্ছেন পরিবারের লোকজনদের। তাদের সবাই এখন হত্যা মামলার ফাঁসির অপেক্ষায়।
সিনহা হত্যা মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের আদালত টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস ও বাহারচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তবে রায়ে সাতজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। শারমিন বলেন, প্রধান দুই আসামির ফাঁসির রায়ে প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে, তবে সাতজনের খালাস নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে, তাদেরও কিছু দায়িত্ব ছিল। গতকালও তিনি সবার শাস্তি প্রত্যাশা করেছিলেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সিনহার মা নাসিমা আক্তার গতকাল এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, তারা বিচারের বাস্তবায়ন দেখার অপেক্ষায় আছেন। সিনহার বোন ও হত্যা মামলার বাদী শারমিন বলেন,আর এটা সবার মাঝে শেয়ার করা। এতে তরুণরা ভ্রমণে উৎসাহিত হবে। তথ্য পাবে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভে ঘটে গিয়েছিল দুঃখজনক একটি ঘটনা। সাবেক সেনাবাহিনীর মেজর সিনহাকে না ফেরার দেশে পাঠিয়ে দিয়েছিল ওসি প্রদিপ এবং তার সহযোগীরা। এর পর থেকেই সারা দেশে এই ঘটনা নিয়ে মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং অপরাধীদের শাস্তি কামনা করে।