গেল কিছু মাস ধরেই একটি বিষয় নিয়ে ছাড়ছে না জট। একের পর এক কান্ড ঘটে যাচ্ছে জাপান থেকে বাংলাদেশে আসা সেই জাপানি মা আর তার দুই সন্তানকে নিয়ে। এ দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নাকানো এরিকো তার দুই সন্তানকে নিয়ে জাপান যাওয়ার চেষ্টাকালে পুলিশ তাকে ফিরিয়ে দেয়। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিমানবন্দর থেকে তাকে ফেরত পাঠানো হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দুই কিশোরী তাদের মায়ের জিম্মায় ছিল। গতরাতে তারা সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে জাপানে যাওয়ার চেষ্টা করে। আদালতের নির্দেশ না থাকায় তাদের যেতে দেওয়া হয়নি।
শনিবার সকালে ইমরান শরীফ জানান, তার জাপানি স্ত্রী গোপনে তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। এ ঘটনায় তাকে সহায়তা করেন দুই বন্ধু। খবর পেয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে জানালে তাদের বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি। পরে আমি নিজে হাজির হয়ে হাইকোর্টের আদেশ দেখালে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। আপিল বিভাগের রায় অমান্য করে পারিবারিক আদালতের চূড়ান্ত রায় হওয়ার আগে দুই মেয়েকে নিয়ে মা জাপানে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ বিষয়ে আগামী ২৭ ডিসেম্বর আমি আপিল বিভাগে অভিযোগ করব।’
এদিকে এরিকো গণমাধ্যমকে বলেন, আগস্টের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি হওয়ার কথা ছিল। এখন ডিসেম্বর মাস। দেশে ফিরতে পারব না।’
এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির জানান, এরিকোর মা জাপানের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে দেখতে তার দুই মেয়েকে নিয়ে জাপান যেতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে এই আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘এভাবে যেতে চাওয়া ঠিক নয়। আমি আদালতে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করব।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক এরিকো ও বাংলাদেশি আমেরিকান নাগরিক ইমরান বিয়ে করেন। তাদের তিন মেয়ে। শিশুদের বয়স যথাক্রমে ১১, ১০ এবং ৭ বছর। ইমরান ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন এবং ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।
ছোট মেয়েকে তার দাদির কাছে রেখে এরিকো ১৮ জুলাই শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন এবং ১৯ আগস্ট ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি রিট দায়ের করেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট বাবা ও মাকে নির্দেশ দেন। দুই সন্তানের শ্বশুরকে ৩১ আগস্ট আদালতে হাজির করতে হবে।
শেষ পর্যন্ত শিশুদের আদালতে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে গুলশান ও আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বলা হয়। জানা গেছে এ নিয়ে পরবর্তীতে আবারো বসবে কোর্ট।