বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে গণসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের মহাসমাবেশ ছাড়াও একই দিনে আওয়ামী লীগও শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ একাধিক দাবিতে মতিঝিল শাপলা চত্বরে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াত। একই দিনে তিনটি রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করায় রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ অক্টোবরের আলোচনা ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত। কারণ যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংকট ও সুষ্ঠু নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে আসছে।
এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ২৮ অক্টোবরের প্রশ্নও উঠেছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী এ বিষয়ে জানতে চান।
প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার ওপর জোর দিয়ে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যেটা জরুরি তা হলো সব দল শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম এবং অবশ্যই ভোটার।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি সব পক্ষকে সহিংসতা, হয়রানি এবং ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করে।
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী ম্যাথিউ মিলারের কাছে জানতে চান, বিরোধী দল ২৮ অক্টোবর একটি বড় রাজনৈতিক সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশে উত্তেজনাপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সমাবেশে বাধা দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে ক্ষমতাসীন মহল।এর মধ্যে রয়েছে গ্রেপ্তার, অভিযোগ গঠন, এমনকি এখন রাতের বেলায়ও বিচার করা হচ্ছে।।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের দ্বারা সহিংসতা উস্কে দেওয়া হচ্ছে।বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ান ইউরেনিয়াম ব্যবহারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো পদক্ষেপ বিবেচনা করছে? তার প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার ওই মন্তব্য করেন। মুশফিক যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার ইস্যু তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি রাষ্ট্রদূত পিটার হাস শুধু নিজের নিরাপত্তা নিয়ে নয়, দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই মঞ্চ থেকে আপনি বহুবার ভিয়েনা কনভেনশন বহাল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তাহলে এ প্রসঙ্গে আপনার মন্তব্য কী?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি আবারও বলব যে, কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনে বাংলাদেশের কূটনৈতিক অঙ্গন এবং এর কর্মকর্তাদের সুরক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের মূল্যায়ন করে। আমরা আশা করি বাংলাদেশ সরকার দেশের অভ্যন্তরে সকল মার্কিন মিশন ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।