সম্প্রতি প্রশান্ত মহাসাগরে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সুনামির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ সাথে রয়েছে আতাতা দ্বীপ। শুনলে অবাক হবেন মাত্র ৬০ জন বাসিন্দা থাকলেও এটি একটি দ্বীপ যেখানে মানুষ বসবাস করে। সম্প্রতি সেই জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফেরা একজন প্রতিবন্ধী জানালেন তার বেঁচে ফেরা ঘটনা। একজন প্রতিবন্ধী কিনা ২৭ ঘন্টা টানা সাঁতরে ফেরেন বাড়ি।
আতাতা একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মাত্র ৬০ জন লোক। লিসালা ফোলাউ (৫৭) তার বাড়িতে ধ্যান করছিলেন এবং ছবি আঁকছিলেন। শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিটি হঠাৎ সুনামিতে পথ হারিয়ে ফেলে এবং হাঁটতে না পেরে গাছে উঠতে চেয়েছিল।
বিশাল আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের পর শনিবার প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ টোঙ্গায় সুনামি আঘাত হানে। সে সময় আতাতা দ্বীপের বাসিন্দা লিসালা ফোলাউ সাগরে ভেসে যায়। তিনি জানান, একদিনেরও বেশি সময় ধরে তিনি সাগরে ভাসছেন। এইভাবে, তিনি ২৭ ঘন্টা পর দৃঢ় সংকল্প সঙ্গে বাড়িতে ফিরতে সক্ষম হয়।
কী করা যায় ভাবতে ভাবতে একটা বড় ঢেউ তাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল, একেবারে সমুদ্রে। ঢেউ আসার সাথে সাথে সে ভেসে থাকে, তারপর আবার সাঁতার কাটে তার বাড়ির দিকে।
৫৬ বছর বয়সী ফোলাউ বলেছেন: ‘আমি মৃত্যুকে ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু আমি দৃঢ়ভাবে সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস করি, যিনি আমাকে রক্ষা করবেন। ‘
“আমার মনে আছে যখন আমি পানিতে ছিলাম আটবার ডুবেছিলাম,” তিনি বলেছিলেন। আমার পা অসাড় হয়ে গেল এবং আমি ঠিকমতো নড়াচড়া করতে পারছিলাম না। সমুদ্র আমাকে ঘুরিয়ে পানির নিচে নিয়ে যাচ্ছিল। ‘ এমন সময় তিনি একটি গাছের কাণ্ড পেলেন।
“আমি আমার ছেলেকে তীর থেকে ডাকতে শুনেছি এবং আমি তাকে উত্তর দিতে চাইনি,” ফোলাউ বলেছিলেন। কারণ আমি চাইনি সে আমাকে খুঁজতে সাঁতার কাটুক। ‘
টোঙ্গায় এ পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। সমুদ্রতলের মধ্য দিয়ে যাওয়া একমাত্র লাইন টোঙ্গাকে বহির্বিশ্বের সাথে সংযুক্ত করেছে; দুটি জায়গাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘটনাটি বিরল ঘটনা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। যেখানে কিনা সুস্থ সবল মানুষের বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে সেখানে তিনি প্রতিবন্ধী হয়েও টানা ২৭ ঘণ্টা সাঁতরেছেন। তাইতো নিজ মুখেই জানালেন গণমাধ্যমকে। কতটা ভয়ানক পরিস্থিতি তার মাঝেও টিকে থাকা যায় যদি মনবল থাকে আর সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভরসা থাকে, এমনটাই বোঝালেন তিনি।