সাম্প্রতিক সময়ে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় কৃষকদের ঋনের কারণে জেলে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ঐ কৃষকেরা গড়ে ২৫-৩০ হাজার পরিমান টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। এরপর তারা সংকটের কারণে ঐ টাকা ব্যাংকে পরিশোধ করতে পারেনি। যার কারণে ঐ এলাকার ১২ জন কৃষককে আটক করার মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনাকে বড় ধরনের অন্যায় ও বৈষম্য বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
শনিবার তারানা হালিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস’বুকে তার ভেরিফায়েড পেজে লেখেন, সমবায় ব্যাংকের ২৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপির মামলায় গরিব মানুষ জেলে, ২৫ হাজার কোটি টাকার খেলাপিরা আরামে ঘুমায়। তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি সমতা চাই। গ্রেফ’তারকৃত কৃষকদের মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। প্রয়োজনে সেই ২৫ হাজার টাকা দেব।
পাবনার ঈশ্বরদীতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধ না করায় দায়ের করা মাম’লায় ৩৭ কৃষকের নামে গ্রেপ্তা’রি পরোয়ানা জারি করেছে পাবনার জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগ। পরে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত তাদের মধ্যে ১২ জনকে আটক করে পুলিশ। বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার দেশের একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে, গ্রেফ’তারকৃত ১৩ কৃষকের পরিবার ও স্থানীয় কৃষক নেতারা দাবি করেন, তাদের ঋণ পরিশোধ না করা সত্ত্বেও পুলিশ গভীর রাতে তাদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে থানায় নিয়ে যায়। তাদের জেলা কারা’গারে পাঠানো হয়েছে। এতে গ্রামের কৃষক ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যে আত”ঙ্ক ও ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে। রাতে বাড়ি বাড়ি পুলিশের অভিযান দেখে ভ’য়ে অনেকেই পালিয়ে যায়।
ভাড়ইমারি গ্রামের কৃষক কিতাব মন্ডল দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, গ্রামে পুলিশ আসার খবর শুনে অনেকেই ভেবেছিলেন কোনো সন্ত্রা”/সী কর্মকাণ্ডের জন্য পুলিশ অভিযানে এসেছে।
ফেস”বুকে পোস্টের ভিত্তিতে ঘটনাটি নিয়ে তারানা হালিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটি খুবই লজ্জাজনক ঘটনা। এই ঘটনায় আমাদের সবার লজ্জিত হওয়া উচিত। পঁচিশ হাজার টাকার জন্য মানুষ জেলে যাচ্ছে, হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপিরা এখনো বিচারাধীন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। কিছু লোক বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছে আবার কিছু লোক বিলাসিতার জন্য লড়াই করছে। এটা নিয়ে কেউ কিছু বলছে না।
তবে বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়, যেখানে দরিদ্ররা সবসময় অন্যায়ের শিকার হয়ে থাকে এবং ক্ষমতাধরের সবসময় ক্ষমতার সুবিধা নিয়ে থাকে অন্যায় করলেও। কিন্তু কিছু কিছু অন্যায় করা ক্ষমতাধর ব্যক্তি গনমাধ্যমের কারণে লোক জানাজানির পর বিচারের আওতায় আনা হয়, কিন্তু তারাও কিছুদিন পর আলোচনা থেকে দূরে সরে গেলে তাদেরকে অন্য কৌশলে মুক্তি দেওয়া হয়। এটা থেকে বের হওয়া এই দেশে সম্ভব নয়।