দৈনিক ২০ কোটি টাকার ক্ষতি মেটানোর জন্য জ্বালানি তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। লোকসান কমিয়ে আনার নামে দেশে চলমান পরিস্থিতির কারনে দুর্দ’শাগ্র’স্ত সাধারণ জনগনের পকেট হতে প্রতিটি দিনে ৫০০ কোটি টাকা লু’টের সুযোগ তৈরি করেছে। খন্দকার মোজাম্মেল হক চৌধুরী যিনি যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব হিসেবে রয়েছেন তিনি এমন কথা বলেন। দাম বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়াটি অবৈধ বলেও দাবি করেছে সংগঠনের তরফ থেকে।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক দাম বৃদ্ধিকে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেন। “জ্বালানিতে ভর্তুকি দেওয়ার সুযোগ আছে,” তিনি বলেন। জ্বালানি খাতে দাম না বাড়িয়ে আমাদের জাতীয় বাজেটের ৬ লাখ কোটি টাকা থেকে বছরে ৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে সরকারের। সংকট কেটে গেলে ধাপে ধাপে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো যেত।
মোজাম্মেল হক জানান, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশে ২০১৩ সালে তেলের দাম বাড়ানো হয়। কিন্তু ২০১৬ সালের শুরু থেকে বিশ্ববাজারে তেলের দাম অর্ধেকে নেমে এলেও সরকার লিটারপ্রতি মাত্র তিন টাকা দাম কমিয়েছিল। পরে আরো দুই দফায় দাম কমানোর ঘোষণা দিলেও তা কার্যকর হয়নি। ফলে তিন টাকা মূল্য কমানোর সুফল ব্যবসায়ীরা পেলেও যাত্রীসাধারণসহ সাধারণ মানুষ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।
বিশ্বব্যাপী চলমান পরিস্থিতির কারনে সৃষ্ট বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টারত নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন-জীবিকা সচল রাখার স্বার্থে বর্ধিত জ্বালানি তেলের মূল্য ও পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারেরও দাবি জানায় যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
মহাসচিব বলেন, বৈশ্বিক সংকটের নানা কারণে দেশের ৭৭ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে। ফলে তিন কোটি ২৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে বলে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এমন সং’কটাপন্ন দেশের মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে যখন দি’শাহারা, ঠিক তখনই জ্বালানি তেলের দাম একলাফে ২৩ শতাংশ বাড়ানো হলো। এতে মানুষের যাতায়াত, পণ্য পরিবহন, খাদ্যপণ্য ও কৃষিজ উৎপাদনসহ সামগ্রিক ব্যয় আরো কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। পণ্য ও সেবামূল্য আরো এক দফা বৃদ্ধির ফলে চ’রমভাবে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। এতে নতুন করে আরো কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্র্যের ঝুঁ’কিতে পড়ার শ’/ঙ্কা রয়েছে।
মোজাম্মেল হক বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় সরকার গত ছয় বছরে চড়া দামে তেল বিক্রি করে একচেটিয়া মুনাফা করেছে। সরকার আয় করেছে ৬৩ হাজার কোটির বেশি। মাত্র পাঁচ মাসে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে একলাফে তেলের দাম ২৩% বৃদ্ধি করা একটি আ’ত্মঘা’/’তী সিদ্ধান্ত।
শরিফুজ্জামান শরীফ যিনি সংগঠনটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে রয়েছেন তিনি বলেন, যে প্রক্রিয়ায় জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে তা অবৈধ। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করার কোনো ক্ষমতা নেই। এটা করার ক্ষমতা রাখে শুধুমাত্র BERC। সেখানে শুনানি শেষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার নিয়ম রয়েছে। সরকার তাদের ক্ষমতার জোরে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার তাদের নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশের আয় বৃদ্ধিকে যারা এই দেশের সাধারণ মানুষ তাদের আয় বৃদ্ধি পেয়ে বলে চালানোর চেষ্টা করছে, যেটা এই দেশের মানুষের সাথে হ’ঠকারিতা করা ছাড়া আর কিছু নয়.