বাংলাদেশে বর্তমানে কিছুটা অর্থনৈতিক নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। যার কারণে কিছুটা সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়েছে দেশ। বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ কমে যাওয়ায় সরকার সেটা কাটিয়ে উঠতে নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালে দেশ বড় ধরনের সংকটে পড়তে পারে, এমন সম্ভাবনার কথা বারবার জানাচ্ছেন এবং সে বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষকে নানা ধরনের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে আগামী বছর তিনটি কারণে সংকট হতে পারে বলে আশ”ঙ্কা প্রকাশ করেছে মন্ত্রিসভা। এ জন্য ২০২৩ সালকে সম্ভাব্য ‘সংকট বছর’ হিসেবে ছয়টি নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সংকটগুলো হলো ইউক্রেন-রাশিয়া যু”দ্ধের প্রভাব, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পরা রোগের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ এবং চীনা পণ্যের পতন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সচিব বলেন, সংকট উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী ছয়টি পরামর্শ দিয়েছেন। এগুলো হলো- খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে, দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠাতে হবে, রেমিটেন্স বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে, বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, খাদ্য মজুদ বজায় রাখতে হবে এবং খাদ্য আমদানি উৎসে কর অব্যাহতি দিয়ে আমদানিকারকদের স্বস্তি দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন, “সম্প্রতি, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ বলছে যে তিনটি কারণে ২০২৩ একটি অত্যন্ত সংকটের বছর হবে এমন আশ”ঙ্কা রয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার বাড়িয়েছে; বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগে সৃষ্ট মহামারীর পরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আগে ইউক্রেনে যু”/দ্ধ শুরু হয়েছে; চীন উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। এই তিনটি বিষয় বিশ্ববাজারকে প্রভাবিত করছে। এই তিনটি বিশ্লেষণ করে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ বলছে, ২০২৩ সালকে সংকট বছরে পরিণত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। সে অনুযায়ী সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ফসলের নতুন জাত উদ্ভাবনের নির্দেশনা দেন। সরকারপ্রধান বলেন, দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠাতে হবে। রেমিটেন্স পাঠানো সহজ করতে হবে। নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সহ পাঠান। একই সঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে, যাতে তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হন।
তৃতীয় পক্ষের কাছে না গিয়ে সরাসরি বিদেশ থেকে খাদ্যপণ্য কেনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিদেশে অদক্ষ কর্মী না পাঠিয়ে দক্ষ জনশক্তি পাঠালে তাদের জন্য উচ্চ বেতনে কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে। যেসব দেশে কর্মী পাঠানো হবে সেসব দেশে চাহিদা অনুযায়ী সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। সঠিক প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের সার্টিফিকেট পান সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রসংগত, শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের অনেক দেশে অর্থনৈতিক সংকট বিরাজ করছে, যার প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশে এমন দাবি করছে বাংলাদেশ। তবে অনেকে মনে করছে সরকার ইচ্ছা করলে দেশ খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে পারে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট খাতে বড় ধরনের পরিকল্পনা দরকার। সার ও তেলের দাম বৃদ্ধির কারনে কৃষি উৎপাদন কমে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তার পর ও একটা প্রশ্ন মানুষের মনে বিরাজ করছে আর সেটা হলো দেশের রিজার্ভ কমে যাওয়ার প্রকৃত কারণ কী?