২০২৩-২৪ সালে এসে ভোট চুরি করা সম্ভব না বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। গাজীপুর-১ আসনের নৌকার প্রার্থী ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘এইবার বুইঝা শুইনাই নামছি। বুইঝা শুইনাই নামছি চোর ক্যামনে আটকাইতে হয়। ২০১৪, ১৮-তে কামডা আমরাই কইরা দিছিলাম। এইবার ক্যামনে আটকাইতে হয় হেইডা আমরা জানি।
হ্যারা কী করতে চাইতেছে সব জানি। এডা দেখবেন, ৭ তারিখে (৭ জানুয়ারি) প্রমাণ কইরা দিমু।’ গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বান্নারা এলাকায় গত শনিবার গাজীপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেলের সমর্থনে নির্বাচনী পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহাঙ্গীর এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে কইছেন, এইবার একটু স্বতন্ত্রটা ঘুরাইয়া দেন। প্রধানমন্ত্রী কইছে, আমি ১৫ বছর দেখছি। আমি ১৫ বছর দেখছি মানুষকে কী সার্ভিসটা দিছেন, সেই পরীক্ষাটা জনগণকে দিয়ে আসেন। পরে গেছে পার্টির সাধারণ সম্পাদকের ওইনো। গিয়া কইছে স্বতন্ত্ররে আর জাহাঙ্গীররে একটু থামায়া দেন। হ্যারে কইছে, আপনি যদি মন্ত্রী হইয়া স্বতন্ত্রকে ভয় পান তাইলে নির্বাচনে দাঁড়াইলেন কেন?’
একই দিন রাসেলের সমর্থনে কালিয়াকৈর উপজেলার চাঁপাই মেদী বাজারে আরেকটি পথসভায় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীর ওপর হামলা চালান জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘আমাকে বলে রাখি, এখানে ভোট চুরির কোনো উপায় নেই। আরে, আমার মা একজন নারী, একজন নারী। তার কোনো দল ছিল না, কোনো দল ছিল না, কোনো নেতা ছিল না। তার ভোটও মেশিনে। তারপরও রাত হয়ে গেলেও লাখ লাখ ভোট নষ্ট হবে বলে মনে হচ্ছে। নিতে পার? কিন্তু পারে না। রাতে ভোট গিন্নিতে যাবে মনে হয়। তাহলে আমি যদি নারীদের ভোট আটকাতে পারি, আমি যদি আমার মায়ের ভোট আটকাতে পারি, তাহলে আমি আমার ভাই-বোনের ভোট আটকাতে পারতাম না? আমি কি হাজার কোটি মানুষের ভোট আটকাতে পারতাম না?
জাহাঙ্গীর আরো বলেন, এখন সমান। আর পুলিশ থাকবে না। এখন সমান সমান, এখন আসুন। ২০১৪ এবং ২০১৮ উপলব্ধ ছিল না। এটি ২০২৩-২৪ সাল। ভোট চুরির উদ্দেশ্য। নিয়ত কইরা দেহেন, আমাদের বাড়িও গাজীপুর। তুমি যা করছো, আমরা তাই করছিলাম। আমরা জানি আপনি কি করবেন। এইসব চালাকি, প্রতারক, মিথ্যাবাদী, প্রতারক, মানুষ ঠকিয়ে ১৭ বছর, ১৫ বছর এমপি-মন্ত্রী থাইকা আবার চুরি করতে চায়?
মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আপনি ১৫ বছর ধরে সরকারি বরাদ্দ পেয়েছেন। ১৫ বছর ধরে, রাজ্য আপনার উপর একটি স্ট্যাম্প লাগিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৫ বছর ধরে টাকা দিয়েছেন। ১৫ বছর ধরে আপনি মানুষের মন জয় করতে পারবেন না। কিছু চামচ রাখা। তারা ভাবে, রাইতে কাম কইরা ফালামু, বাক্সে কি ভাইরা ফালামু। আপনি কিভাবে এই প্রজ্ঞা শিখবেন? এটা মানুষের বুদ্ধি নয়।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কী ভেবেছেন, ৩০ তারিখ সবাই কাগজপত্র জমা দেবেন। ১৭ তারিখে সবাই ইদ্রো করিরা নেবে। ১৮ তারিখ আরা এমপি হবেন। আমি বলছি না, এইবার দেখাও যে জনগণের ক্ষমতা আছে।’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে এসব বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এসব ভিডিও এখন ভাইরাল হয়ে গেছে। বক্তব্যের বিষয়ে জানতে গতকাল জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।