বিশ্বে ডব্লিউএইচওর ৬ জন আঞ্চলিক পরিচালক রয়েছেন। তাদের একজন হিসেবে কাজ করছেন বঙ্গবন্ধুর পুত্রবধূ সায়মা ওয়াজেদ। তিনি এই অঞ্চলের 200 কোটি মানুষের স্বাস্থ্য দেখভাল করবেন। এটা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এ সময় তিনি আরও বলেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবার বহুমুখী উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কারণে প্রতিবেশী অনেক দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান করে।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় রাজধানীর মহাখালীর নিপসম মিলনায়তনে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য সেবায় আমরা যথেষ্ট অগ্রগতি করেছি। আমাদের মা ও শিশু মৃত্যুহার কমেছে। ফলে আমরা এমডিজি অর্জন করতে পেরেছি। এবার আমাদের লক্ষ্য এসডিজি অর্জন করা। পৃথিবীর একমাত্র দেশ আমরাই কালো জ্বর নির্মূল করতে। আমরা এশিয়ার 20তম দেশ যারা ফাইলেরিয়াসিস মুক্ত। প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক, একটি আন্তর্জাতিক পদে নিযুক্ত হয়েছেন। এসব অর্জনের ফলে অনেক প্রতিবেশী দেশ শেখ হাসিনাকে সম্মান করে। আমাদের রাষ্ট্রের প্রতি শ্রদ্ধা। এমনকি তারা আমাদের অনুসরণ করে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক রয়েছেন ৬ জন। তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এ অঞ্চলের ২০০ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য দেখভাল করবেন সায়মা ওয়াজেদ। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।
জাহিদ মালেক বলেন, এক সময় আমাদের দেশে ৮০ শতাংশ অন্ধত্ব ছিল। যা এখন আমরা শূন্যের কোটায় নিয়ে এসেছি। এর প্রধান কারণ আমাদের টিকা ব্যবস্থাপনা। আজ সারাদেশে ২৩ লাখ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এই কারণে, আমাদের 240 হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও কাজ করছেন। এটি আমাদের জন্য একটি বিশাল উদ্যোগ। এসব কারণে আমাদের শিশু-মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে।
প্রতিবছর ক্যাম্পেইনের কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিটামিন এ ক্যাপসুল খেলে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এমনকি এটি বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। তাই প্রতি বছর এত বড় অনুষ্ঠান করি।
ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে মা ও শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ। সন্তানদের ভালো রাখতে বাল্যবিবাহ কমাতে হবে। 50 শতাংশ এখনও বাড়িতে। এটা কমাতে পারলে শিশু ও মায়েদের মৃত্যুহার কমবে। আমাদের মনে রাখতে হবে গর্ভবতী মা সুস্থ থাকলে তার অনাগত সন্তানও সুস্থ থাকে।
এছাড়া আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি খুবই কম। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি বাড়াতে হবে। এখনও ৫০ শতাংশ হোম ডেলিভারি। যেখানে কোনো প্রশিক্ষিত লোক নেই। এক্ষেত্রে আমাদেরও কিছু করার আছে। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র কখনোই ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে পারে না। জাহিদ মালেক বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি বাড়াতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মঘণ্টা ২৪ ঘণ্টা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব আজিজুর রহমান প্রমুখ।