মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব অবৈধ প্রবাসীদের ধরতে ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে। গত সপ্তাহে দেশটিতে ১১ হাজারের বেশি অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অবৈধভাবে বসবাস ও দেশের আবাসিক ব্যবস্থা বিধি লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেফতারকৃত হাজার হাজার প্রবাসী ছিলেন। রোববার (১ অক্টোবর) খালিজ টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবাসিক, শ্রম আইন ও সীমান্ত নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১১ হাজার ৪৬৫ জনকে গ্রেপ্তারের খবর দেয়। ২১ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
খালিজ টাইমসের মতে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৭,১৯৯ জনকে অবৈধভাবে বসবাস এবং দেশের আবাসিক বিধি লঙ্ঘনের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এছাড়া সীমান্ত সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের দায়ে ২,৮৮২ জনকে এবং শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে আরও ১,৩৮৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিস্তারিত তথ্য অনুযায়ী, সৌদি সীমান্ত অতিক্রম করার সময় অতিরিক্ত ৭১১ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে, ৫২ শতাংশ ইয়েমেনি, ৪৫ শতাংশ ইথিওপিয়ান এবং ৩ শতাংশ অন্যান্য জাতীয়তার নাগরিক। এছাড়াও, সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে সৌদি আরবে প্রবেশের চেষ্টাকারী আরও ১৪ জনকে আটক করেছে।
এছাড়া বাসস্থান এবং কাজের নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন ও আশ্রয় সুবিধা দেওয়ার সাথে জড়িত ১৫ জন ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খালিজ টাইমসের মতে, বর্তমানে ৪৩,৭৭২ জন অবৈধ অভিবাসী আইন লঙ্ঘনের জন্য আইনি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৩৬ হাজার ৪০৪ জন এবং নারী ৭ হাজার ৩৬৮ জন। এর মধ্যে ৩৮ হাজার ৩৭৯ জনকে প্রয়োজনীয় ভ্রমণ নথি পেতে তাদের নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশনে রেফার করা হয়েছে।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে যে যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তিকে সৌদি আরবে প্রবেশ, অবস্থান ও পরিবহনে সহায়তা করে, তাহলে সেই ব্যক্তিকে ১৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। জরিমানার পাশাপাশি ১০ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা এবং যানবাহন ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, সৌদি আরবে যেন অবৈধভাবে কেউ থাকতে না পারেন সেটি নিশ্চিতে গত কয়েক বছরে বেশ কড়াকড়ি আরোপ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে কয়েকদিন পরপর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান পরিচালনা করছে তারা।
এসব অভিযানে অনেকেই আটক হচ্ছেন এবং পরবর্তীতে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।