নওশের আলী নামের এক ব্যক্তি তার ছাত্র জীবনে বিনা টিকিটে কলেজে যাতায়াতের ভাড়া মিটিয়ে দিলেন। জানা যায় তিনি চার বছর ধরে কোনো টিকেট ছাড়াই ট্রেনে যাতায়াত করতেন। অনেক সময় তিনি ইচ্ছা করে টিকিট কাটতেন না আবার কখনো কখনো টাকা থাকতো না তাই টিকিট কাটতেন না। নওশের আলীর বয়স এখন ৭০ বছর, আর এই সময়ে এসে তিনি সেই চার বছরের ট্রেনের টিকিটের টাকা পরিশোধ করলেন।
তিনি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বাজার বেতেঙ্গা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা।
শনিবার তিনি রাজবাড়ী স্টেশনের স্টেশন মাস্টার তন্ময় কুমার দত্তকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে দায়মুক্তি দেন। তবে এখন এই ভাড়া পাঁচ গুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তন্ময় কুমার।
জানা গেছে, নওশের আলী ১৯৬৯ সালে গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর রাজবাড়ী সরকারি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৭১ সালে এইচএসসি পাস করে একই কলেজে ডিগ্রির জন্য ভর্তি হন। নওশের আলী ছাত্রজীবনের চার বছর ট্রেনে করে রাজবাড়ী কলেজে আসতেন। বিনা টিকিটে ট্রেনে চড়তেন। এরপর ১৯৭৫ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। ২০১০ সালে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদ থেকে অবসর নেন।
নওশের আলী বলেন, ছাত্র থাকার সময় যে কয়দিন কলেজে এসেছি সব দিনই বিনা টিকিটে এসেছি। হঠাৎ আমার মনে হলো, যখন আমি ছাত্র ছিলাম তখন আমার পকেটে টাকা ছিল না। কিন্তু এখন আমার কাছে টাকা আছে। তাই সেই টিকিটের টাকা দেওয়ার চিন্তা মাথায় আসে। এ কারণে শনিবার দুপুরে স্টেশন মাস্টারের কাছে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তাদের কাছ থেকে মওকুফ পাই।
নওশের আলীর সহকর্মীরা জানান, নওশের আলী যখন ছাত্র ছিলেন, তখন এই অঞ্চলে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল ট্রেন। তবে বলা যায় নওশের আলী নজির স্থাপন করেছেন।
তন্ময় কুমার দত্ত যিনি স্টেশনমাস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি বলেন, নওশের সাহেব স্টেশনে এসে হঠাৎ করে জানালেন যে, তিনি ছাত্রজীবনে বহুদিন ধরে কোন টিকিট ছাড়াই ট্রেনে করে কলেজে যাতায়াত করেছিলেন। সেই টিকিটের টাকাটা এখন তিনি দিতে চান। এরপর তিনি আমার নিকট ৫০০০ টাকা দেন, আমরা পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে সেই পরিমাণ অর্থের টিকিট কেটে দিয়েছি।