সম্প্রতি কিছুদিন আগেই নিজ মামাত বোনকে বিয়ে করেছিলেন সবুজ (২২)। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই নববধুকে ঘরে তোলার কথা ছিল তার। কিন্তু ভাগ্য সহয় হলো না সবুজের, নববধুকে ঘরের তোলার আগেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমাতে হলো তাকে। জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারান তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা সদরের মনোহরগঞ্জ বাজারে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ফোনে কথা বলা অবস্থায় মনোহরগঞ্জ বাজারের আমান উল্ল্যাহ মার্কেটের ছাদে উঠেন সবুজ। এক পর্যায়ে ছাদের উপর দিয়ে প্রবাহিত চলমান বৈদ্যুতিক লাইনে অসর্তকতাবশত সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৮ দিন আগে যুবকটি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। বিয়ে করেন মামাত বোনকে। কদিন পরেই বাড়িতে তুলে আনার কথা ছিল। কিন্তু হাতে লাগানো মেহেদির রং শুকানোর আগেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন।
তার মৃত্যুর খবর পেয়ে ছুটে আসেন নববধূ মনি। সদ্য বিধবা বধুর চিৎকারে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশের বাতাস। রঙ্গিন শাড়ী পরে যেখানে স্বামীর কাছে আসার কথা সেখানে তাকে পরতে হলো সাদা কাপড়। স্বামীর মৃত্যুতে শোকবিহবল স্ত্রী বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। থামছে না মা-বাবার আহাজারী।
মনোহরগঞ্জ বনিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জহির রায়হান জানান, বৈদ্যুতিক লাইনটি বাজারের বিভিন্ন অংশে অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে বাজারের উপর দিয়ে প্রবাহিত ১১ হাজার ভোল্টেজের মেইন লাইনের তারে কভার আবৃত না থাকায় এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যুতের মেইন লাইনটি বাজার থেকে সরানোর দাবী জানান ব্যবসায়ীরা।
আর এরই জের ধরে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-০৪, মনোহরগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. নজরুল ইসলাম মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদিকদের জানান, এর আগে তিনি এমনঅভিযোগ পাননি। তবে এবার এ অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ঐ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অতি শীঘ্রই সবরকম ব্যবস্থা গ্রহন করা হবেও জানিয়ছেন তিনি।
এদিকে সবুজকে হারিয়ে রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবার-পরিজন। তার এ অকাল মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তারা।