সাত সালেও অনেকে মনে করতো ইলেকশনটা হয়ে যাবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি
২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারী যে নির্বাচনটি ডেকেছিলেন রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজউদ্দিন আহমেদ, তাতে মনোনয়ন প্রত্যাহরের তারিখ ছিল ৩ জানুয়ারী। ঐদিন আওয়ামীলীগ ও এরশাদের জাতীয় পার্টি প্রত্যাহার করে। ফলে বিএনপির ১৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যায়। কিন্তু এর এক সপ্তাহ পরেই নির্বাচনটি বাতিল হয়েছিল ১/১১ ঘটার কারণে। কাজেই ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৬ জানুয়ারী এই কুড়ি দিনের মধ্যে যেকোনো সময় যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে।
বর্তমানে যে অবস্থা চলছে, দেশে সকল বিরোধী দল হাসিনার ঘোষিত ডামি নির্বাচনটি বর্জন করেছে, এবং দেড় মাস ধরে হরতাল/ অবরোধ করে চলছে, যা ২০০৭ সালের চেয়ে অনেক বেশি জোড়ালো এবং শক্তিশালী। উপরন্তু বর্তমানের এই ডামি নির্বাচনটি কেবল বাংলাদেশের জনগন প্রত্যাখ্যান করেনি, আন্তর্জাতিকভাবে, বিশেষ করে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, সহ বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি এই নির্বাচনকে গ্রহণ করছে না। যুক্তরাষ্ট্র আগেই বারংবার সতর্ক করেছে যে, গণতান্ত্রিক ধারাকে ক্ষতিগ্রস্থ করে এমন কোনো নির্বাচন তারা গ্রহণ করবে না, বরং এর সাথে যে বা যারা জড়িত থাকবে তাদের সবার উপরে নিষেধাজ্ঞা সহ কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে। অন্যদিকে বানিজ্য ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কথাও আলোচনায় আছে।
বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট:
ক) আগামী কাল ১৭ ডিসেম্বর, ডামি নির্বাচনের নমিনেশন প্রত্যাহারের দিন। জনগনের প্রতিবাদ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার মুখে যারা নির্বাচন করতে চাইবে, বিপদে পড়বে। সাথে দেশও। এই বিষয়গুলি তারা বোঝে। আর তাই শেষ সময়ে চমকপ্রদ অনেক কিছু ঘটতে পারে।
খ) চলমান সংকট ১৮ তারিখ থেকে নতুন ফেজে ঢুকবে। দেশজুড়ে সর্বদলীয় অবরোধ চলতে পারে লাগাতার। তাই সমাধানও সেভাবেই হবে।
গ) যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ সংকটে ঢুকে পড়েছে, এবং নির্বাচন যে অংশগ্রহণমুলক ও গণতান্ত্রিক হচ্ছে না, তাই এই সময়ে ব্যাপক ভিত্তিক ব্যবস্থা নিতে পারে। যার মধ্যে অর্থনৈতিক অবরোধ/ বানিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা/ ম্যাগনেটস্কি স্যাংকশন/ প্রাতিষ্ঠানিক স্যাংকশন থাকতে পারে। আর তখন পরিস্থিতি কন্ট্রোলের বাইরে চলে যাবে। সম্ভবত এই লক্ষ নিয়েই একই সপ্তাহে কেনেডি ফাউন্ডেশন সহ ৬ সংগঠনের কড়া বিবৃতি, এমনেস্টির বিবৃতি, অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের কড়া অবস্থান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দুই এমপির চিঠি- ৭ তারিখের আগে কড়া ব্যবস্খা নিতে হবে।
ঘ) এই সময়ে যেকোনো কারণ দেখিয়ে ইসি নির্বাচন বাতিল করতে পারে। স্মর্তব্য, হাবিবুল আউয়ালের তিন মেয়ে কিন্তু থাকে অস্ট্রেলিয়াতে।
ঙ) নানাবিধ অপরাধে যুক্ত হাসিনা পুত্রকে চেপে ধরে সমাধানে যেতে পারে।
চ) অগণতান্ত্রিক নির্বাচনের সাথে যুক্ত হলে সেনাবাহিনী বা পুলিশের ওপরে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসতে পারে।
ছ) নির্বাচনী সংঘাতে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে বাতিল হয়ে যেতে পারে শিডিউল।
জ) ১/১১র মত ঘটনা ঘটতে পারে।
ঝ) গণআন্দোলন চুড়ান্ত রূপ নিলে নব্বইয়ের মত স্বৈরাচারের পতন ঘটতে পারে।