Friday , November 22 2024
Breaking News
Home / Sports / ১৬ বছর কিপিং করা মুশফিককে অপমান করা হলো, সফল হলে তালি, না হলে গালি : মাশরাফি

১৬ বছর কিপিং করা মুশফিককে অপমান করা হলো, সফল হলে তালি, না হলে গালি : মাশরাফি

বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার ও সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলের বাইরে রয়েছেন। তিনি এখনো সব খেলাকে বিদায় জানানি। দেশের এই তারকা ক্রিকেটার বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সব সময় খোঁজ খবর রাখেন। এদিকে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে অসংখ্য তরুণ ক্রিকেটার এসেছে। তাদের ভালো খেলার মাধ্যমে দল বর্তমানে অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে এবার বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে। এই তারকা ক্রিকেটার অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ছিলেন না। এ সময় দলের কিপিং করেন সোহান। অস্ট্রেলিয়া সঙ্গে সোহান অনেক ভালো খেলেছেন। এ জন্য তাকে দলে রাখতে চান কোর্স। এমনকি তাকে ও মুশফিককে ভাগ ভাগ করে কিপিং করার কথা বলা হয়েছে যা নিয়েই ব্যাপক আলোচনা। তবে এবার এই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে উইকেটকিপিং নিয়ে জাতীয় দলে চলছে তুলকালাম। ১৬ বছর ধরে দলকে সার্ভিস দিয়ে যাওয়া মুশফিকুর রহিমকে অনেকেই আর কিপার হিসেবে দেখতে চান না। মুশফিক নিজেও কিপিং ছাড়তে চান না। অন্যদিকে দলে আছে লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহানের মতো তরুণ কিপার। যারা খুব ভালো করছে। সমস্যা সমাধানে নিউজিল্যান্ড সিরিজে সোহান-মুশফিকের কিপিং ভাগাভাগি করার তত্ত্ব হাজির করেছেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এই ‘সমাধানের’ তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

গতকাল সোমবার রাসেল ডমিঙ্গোর সংবাদ সম্মেলনের পর দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ম্যাশ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লিখেন, ‘১৬ বছর যে মানুষটা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সার্ভিস দিচ্ছে, তাকে নিয়ে মন্তব্য করার আগে আপনি যত বড় ক্ষমতাধর মানুষ হোন না কেন, একটু জায়গা বুঝে বলা উচিত। মুশফিক কিভাবে জাতীয় দলে এসেছে, তা সবাই জানে। সিম্পলি তার ব্যাটিং দক্ষতা। একটা সময় পর্যন্ত বিশ্ব ক্রিকেটে শুধু কিপার হিসাবেই খেলা যেত, উদাহরণ ভুরি ভুরি। কিন্তু গিলক্রিস্ট আসার পর সব হিসাব পাল্টে যায়, যার সুত্র ধরে ইন্ডিয়া টিমে দেখেছি রাহুল দ্রাবিড়কেও কিপিং করতে, যাতে দল সুবিধা মতো এক্সট্রা একজন ব্যাটসম্যান বা বোলার খেলাতে পারে।’

তিনি আরও লিখেন, ‘বিশ্ব ক্রিকেটের দুজন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটারকে, সেটা আবার নিজ দলের খেলোয়ারকে, আপনি যু”দ্ধ করে বাঁচতে বলবেন, সেটা ড্রেসিং রুম পর্যন্ত থাকাই ভালো। অবশ্যই দলের স্বার্থ, সবার আগে দল, দলের আগে কোনো খেলোয়াড় হতে পারে না। কিন্তু যে ক্রিকেটারগুলো দেশের হয়ে খেলতে নামে, তারা কোনো সহানুভূতি নিয়ে নয়, বরং তার শরীরের সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দলে জায়গা পায়। মুশফিকের গল্প আমরা সবাই জানি, তার নিবেদন কী পর্যায়ে। বাংলাদেশের হাজার হাজার উঠতি ক্রিকেটারদের আইডল সে। টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত তারা তাদের মতো করে নেবে, এটাই তো স্বাভাবিক এবং অবশ্যই ভালোর জন্য নেবে। সফল হলে তালি, না হলে গা’লি, যা সারা বিশ্বেই হচ্ছে।’

দলে এই সিদ্ধান্তের বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা করছেন মাশরাফি, ‘কে খেলবে, কোন পজিশনে খেলবে, কার রোল কি, এগুলো তো দলের একান্ত পরিকল্পনা, যা ড্রেসিং রুমে শুরু, আবার ড্রেসিং রুমেই শেষ হয়। বাহিরে বলতে গেলে তো খেলোয়ারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয় যা, তার স্বাভাবিকতাকে বাধাগ্রস্ত করবে। সোহান সম্ভবত দলের সেরা কিপার। সাথে লিটন, এক সিরিজ গ্যাপে যোগ হলো মুশফিক। এক দলে এত কিপার, এ তো আনন্দের। তা না হয়ে, বের হয় বিষাদ। এতটুকু সামাল দিতে না পারলে তো সমস্যা, যা এক পর্যায়ে দলের ভিতর অদৃশ্য এক বাজে প্রতিযোগিতা চলে আসবে। দলে প্রতিযোগিতা সব সময় দলের সেরাটা বের করে আনে, তবে সেটা সুস্থ হতে হবে। কাউকে আ”ঘা”’ত করে নয়।’

শেষে মাশরাফি লিখেন, ‘আমি শুধু ভাবছি এতে কি সোহানের জন্যও খুব ভালো হলো, যে দুই ম্যাচে সব দেখিয়ে টিকে থাকতে হবে, তাহলে বিগত দুই সিরিজ সে যা করল, তার কি হবে! লিটন কি বলবে? এখন ও তো কিপিং ভুলেই যাবে। মুশফিককে পারফর্ম করতে হবে ১৬ বছর খেলার পর, এটা বলে দেওয়ার কিছু নাই। সে খুব ভালো করেই জানে। বরং বাহিরে এভাবে বললে তার নিবেদনকে অসম্মানিত করা হয়, যা তার প্রাপ্য নয়। সে সেরা ব্যাটসম্যান বলেই ১৬ বছর দেশকে সার্ভিস দিয়েছে। আবার দলের প্রয়োজনে তাকেই কিপিং করতে হতে পারে। তখন যদি সে না বলে, সেটা কি ভালো শোনাবে?’

উল্লেখ্য, দেশের তারকা ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম অসংখ্য ম্যাচে জয়ের নায়ক। তিনি দেশের সব থেকে দক্ষ ও কঠোর পরিশ্রমি ক্রিকেটার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিপিং এর দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তবে তিনি অস্ট্রেলিয়া সিরিজে না থাকায় এ সময় সোহান কে দলে নেওয়া হয়। আর তাকে দলে নেওয়া হলে তিনি ভালো খেলে কোর্সের মন জয় করেন। এরপর তাকে ম্যাচে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে তাকে ও মুশফিকুর রহিমকে দিয়ে কিপিং করার বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

About

Check Also

সাকিব ইস্যুতে বাংলাদেশকে ‘নিষিদ্ধ’ করতে পারে আইসিসি

সাকিব আল হাসানকে দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে তার ভক্তরা নানা কর্মসূচি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *