সাবাই আসল ধর্ম এই কথাটা অনেকেই মনে প্রানে বিশ্বাষ করেন। তমনই এক ব্যক্তি হলেন খোদেজা বেগম। তিনি নিজে না খেয়ে অন্যদের সেবা করে থাকেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। খোদেজা খাতুন (৬০) জনপ্রতিনিধি। তিনি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপ-জেলার বারুহাস ইউনিয়নের দুইবারের নির্বাচিত সদস্য। তার পরিবারের কোনো জমি নেই। তিনি খাস জমিতে থাকেন। আর সে তার সংসার চালাতে একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করে। মজুরি দিনে দেড়শ টাকা। খোদেজা খাতুনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাজেদুল আলম।
প্রথম আলো: কেমন আছেন?
খোদেজা খাতুন: ভালো আছি।
প্রথম আলো: রেস্টুরেন্টে কী করেন? আপনি কত বেতন পান?
খোদেজা খাতুন: আমি মাছ, মাংস, সবজি, মশলা কেটে ধুয়েছি। আমি প্রতিদিন উপস্থিতি 150 টাকা পাই।
ইউপি সদস্য খোদেজা খাতুন মো
প্রথম আলো: আগে কী করতেন?
খোদেজা খাতুন: মানুষের বাড়িতে কাজ করতাম। রাস্তার মাটিও কেটেছি।
ইউপি সদস্য খোদেজা খাতুন মো
সাংবাদ মাধ্যম: পরিচিতরা কিছু বলেন?
খোদেজা খাতুন: কেউ কেউ বলেছেন ভালো হয়েছে। কেউ কেউ উপহাসও করেছেন। কিন্তু আমার স্বামী এবং সন্তানরা সবসময় আমার পাশে ছিল।
সাংবাদ মাধ্যম: নির্বাচনে অংশ নিতে গেলেন কেন?
খোদেজা খাতুন: ছোটবেলা থেকেই মানুষের কাছাকাছি থেকেছি। আমি তাদের কাজ করতাম। মানুষ আমাকে ভালোবাসে এবং নির্বাচনে দাঁড়ায়।
সাংবাদ মাধ্যম: তারপর?
খোদেজা খাতুন: প্রথমবারের মতো নির্বাচনে হেরেছি। আমি ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বার নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। আমি চাকরিতে পাশ করি। আমি গত নির্বাচনেও (2022) পাস করেছি।
সাংবাদ মাধ্যম: কত ভোট পেয়েছেন?
খোদেজা খাতুন: ১ হাজার ৭৩১ ভোট। আমার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী পেয়েছেন ১ হাজার ৬৬ ভোট।
সাংবাদ মাধ্যম: জনগণ কেন আপনাকে ভোট দিয়েছে, আপনি কী মনে করেন?
খোদেজা খাতুন: সরকার যে সহায়তা দেয় তা জনগণের মাঝে বিতরণ করেছি। প্রয়োজনে তার পাশে দাঁড়াতাম। হয়তো তাই মানুষ ভোট দিয়েছে।
সাংবাদ মাধ্যম: পড়াশোনার সুযোগ পেলেন?
খোদেজা খাতুন: গ্রামের স্কুলে পড়া শুরু করি। কিন্তু সংসারের অভাবে তা বেশিদূর এগোয়নি।
সাংবাদ মাধ্যম: পরিবারে কে কে আছেন?
খোদেজা খাতুন: সুপারি বিক্রি করেন স্বামী আবু তাহের। তিন ছেলে আছে। তারা সবাই বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে।
সাংবাদ মাধ্যম: আগামী দিনে কী করতে চান?
খোদেজা খাতুন: আমি মানুষের পাশে আছি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মানুষের পাশে থাকতে চাই।
সাংবাদ মাধ্যম: যদি জানতে চান, এখন কী চান, উত্তর কী হবে?
খোদেজা খাতুন: আমি একটা ভালো ঘর করতে চাই। সরকারি জায়গায় ভাঙা ঘরে সারা জীবন কাটিয়েছেন। ভালো ঘর থাকলে ভালো হতো।
খোদেজা খাতুনের এই সাক্ষাৎকারটি ১০ জুন নেওয়া হয়েছে। দুই দিন পর সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বাজারের সাহা অ্যান্ড সন্স নামের একটি রেস্টুরেন্টে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। খোদেজা খাতুন বর্তমানে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মাথায় গুরুতর চোট পান তিনি। খোদেজা খাতুনের সুস্থতার জন্য তার স্বজনরা দোয়া চেয়েছেন। তিনি সুস্থ হয়ে বাসায় নিরাপদে ফিরে আসুক এমনই প্রতাশ্যা জানিয়েছেন তার এলাকাবাসীর অনেকেই।