Sunday , November 24 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ১৪-১৫ জনরে মাইরা ফালাইছি, তোরে মাইরা ফালাইলেও কিছু হবে না: চিকিৎসক

১৪-১৫ জনরে মাইরা ফালাইছি, তোরে মাইরা ফালাইলেও কিছু হবে না: চিকিৎসক

কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলায় হাসি আক্তার নামের ৩৫ বছর বয়সী একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী স্থানীয় একটি মালিকানাধীন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে তাকে হ/”ত্যার হুমকি দেয় একজন চিকিৎসক। জানা গেছে কটিয়াদীতে প্রতিষ্ঠিত রেনেসা ডায়াগনস্টিক এ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে এই ঘটনা ঘটে। সেখানকার মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মাহফুজুল হক সোহাগের বিরুদ্ধে এমন ধরনের অভিযোগ উঠেছে।

জীবনের নিরাপত্তায় কটিয়াদী উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত রেনেসা ডায়াগনস্টিক এ্যান্ড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুল হক সোহাগকে আসামি করে ১৩ জুলাই কটিয়াদী মডেল থানায় বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন হাসি আক্তারের স্বামী হারুন মিয়া।

ডা. মাহফুজুল হক সোহাগ প্রসূতি হাসি আক্তারকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে বলেন, আমি এ পর্যন্ত ১৪-১৫ জন রোগীরে মাইরা ফালাইছি। এখন তোকেসহ ২-৪ জনকে মাইরা ফেললেও কিছু হবে না।

প্রসূতি মা হাসি আক্তার বলেন, প্রসব ব্যথা নিয়ে গত ২৬ এপ্রিল আমাকে কটিয়াদী রেনেসা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিন সিজারিয়ান অপারেশন করে আমার ছেলের জন্ম হয়। অপারেশনের সময় আমার ও পরিবারের কারো অনুমতি ছাড়াই ডা. সোহাগ আমার জরায়ু কেটে দিয়েছে। অপারেশনের তিন দিন পর আমি ছুটি পেয়ে বাড়ি চলে যাই।

বাসায় আসার পাঁচদিন পর আমার সেলাই কাটতে হাসপাতালে ফিরে আসেন ডা. সোহাগ বলেন, আমার অপারেশনের স্থানে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে। ফলে আমাকে পুনরায় ভর্তি হতে হবে। তার পরামর্শ অনুযায়ী আমি ভর্তি হই এবং ১৫ দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাই। অপারেশনের পর থেকে আমি আমার ডান পা সোজা করতে পারছি না। মনে হয় শিরা ছিঁড়ে যাচ্ছে কোথাও। অপারেশন স্থানেও সংক্রমণ আছে।

এমন পরিস্থিতিতে আমি আমার মোবাইল ফোন থেকে ডা. সোহাগের নম্বরে ফোন করে আমার সমস্যার কথা জানালে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন- তুমি এখনো বেঁচে আছ, চিকিৎসার সময় তোমাকে মাইরা ফেলা উচিত ছিল।

তিনি হুমকি দিয়ে বলেন- আমি এই পর্যন্ত ১৪-১৫ জন রোগী মাইরা ফালাইছি। তোকেসহ আরও ২-৪ জন মাইরা ফালাইলেও আমার কিছু করতে পারবে না।

যার বিস্তারিত কল রেকর্ড আমার কাছে আছে। এমতাবস্থায় আমার অঙ্গ-হানী হবার সম্ভাবনা রয়েছে। আমার স্বামী একজন গরীব মানুষ, তিনি কীভাবে আমার চিকিৎসা করাবেন? ডাক্তারের শাস্তি চাই। এবং আর কোনো রোগী যেন তার অপচিকিৎসার শিকার না হয়।

অভিযোগের বিষয়ে রেনেসা ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুল হক সোহাগ বলেন, হাসি আক্তার নামে এক নারীর সিজারিয়ান অপারেশন করি। অপারেশনের স্থানে সংক্রমণের কারণে আমি তাকে আবার চিকিৎসা করি। এতে তিনি সন্তুষ্ট হননি এবং আমাকে ফোন করে বিরক্ত করলে আমি উত্তেজিত হয়ে বললাম যে, আমি এ পর্যন্ত ১৪-১৫ জন রোগীকে মাইরা ফেলেছি। আমি আমার চিকিৎসা জীবনে কখনো রোগীর জীবন হারাইনি এবং হাসি আখতারকে হ/”ত্যার হুম”কিও দেইনি।

কটিয়াদী মডেল থানার এসআই ও অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ দুলাল মিয়া জানান, ডা. মাফুজুল হক সোহাগের বিরুদ্ধে হাসি আক্তারের স্বামী হারুন মিয়ার অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মোঃ দুলাল মিয়া যিনি কটিয়াদী মডেল থানার এসআই হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি ঘটনার বিষয়ে জানান, ডাক্তার মাফুজুল হক সোহাগের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী অভিযোগ দায়ের করার পর তদন্ত শুরু হয়েছে। এই অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা দুলাল মিয়া নিজেই। তিনি বলেন, যদি এ অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

About bisso Jit

Check Also

সংস্কারের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি-লুটপাট

সংস্কার ও উন্নয়নের নামে কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে হরিলুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *