বাংলাদেশ পাবলিক ওয়ার্ক কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ১২ বছর ধরে অনেক পরীক্ষা হয়েছে। আমি জানি না যদি সেগুলি যদি এখন প্রশ্ন উঠে তবে সেই পরীক্ষাগুলির কী হবে। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেলে আগারগাঁও কর্ম কমিশন ভবনে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ‘কমপক্ষে ১২ বছর ধরে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ রয়েছে’ প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মো: সোহরাব হোসাইন বলেন, যখনই কোনো পরীক্ষা হয়, তখন সেখানে কোনো অনিয়ম হলে আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে হোক বা পরীক্ষার্থীদের মাধ্যমে হোক, বা বিভিন্নভাবে (অভিযোগ) আসে। ১২ বছর আগের পরীক্ষা নিয়ে এতদিন পরে প্রমাণ কীভাবে হবে? তিনি বলেন, পিএসসি বিষয়টি তদন্ত করছে এবং ১২ বছর আগের প্রশ্নফাঁসের অভিযোগেও এই তদন্ত কমিটি কাজ করবে। বিষয়টি আমাদের তদন্তাধীন। আমাদের তদন্ত প্রতিবেদনে পুরো বিষয়টি সম্পূর্ণ কোট-আনকোট করে বেরিয়ে এসেছে। পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, কোনো অপরাধ প্রমাণিত হলে এবং তা যদি পিএসসির এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে তাহলে আইনে যে ব্যবস্থা রয়েছে তার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে পিএসসি। তিনি বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে পিএসসির সাবেক চালকের জড়িত থাকার বিষয়টি আমাদের জন্য বেদনাদায়ক।
ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ছড়ানো নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, এতে প্রমাণ হয় না যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।আপনারা যে কেউ একটা মোবাইল ফোন আমাকে দেন। পাঁচদিন আগে একটা ছবি আপনি পোস্ট করেছেন, সেটা আমি আজ অনুষ্ঠিত একটা পরীক্ষার প্রশ্ন দিয়ে বদলে দিতে পারবো। মনে হবে পরীক্ষার পাঁচদিন আগে এ প্রশ্নপত্রটা পোস্ট করা হয়েছে। এটা করা সম্ভব হবে। এ ধরনের ঘটনা দিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, প্রমাণ করা যায় না। তিনি বলেন, লটারিতে কোন সেট আসবে, সেটা তো শুধু সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ বলতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে প্রশ্নফাঁস খুবই কঠিন। তবে প্রশ্নফাঁস যে হয়নি বা হতে পারে না, তা শতভাগ নিশ্চিত করে বলা যায় না। আমি এটুকু বলবো, প্রশ্ন ফাঁস করা ভীষণ ভীষণ কঠিন।
সোহরাব হোসেন বলেন, পিএসসির অধীনে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ব্যক্তির পরিচয় সম্পূর্ণ গোপনীয়। তারা প্রশ্নপত্র তৈরি করে সিলমোহর করে এবং প্রায়শই ডাকযোগে সরাসরি পিএসসিতে পাঠায়। তারপর একদিন ১০ জনের কাছ থেকে প্রশ্ন পাওয়ার পর আমরা প্রশ্নপত্র মডারেশনের জন্য একটি মিটিং ডাকি। গোপন কক্ষে সিলগালা করা সেই প্রশ্ন খোলা হয়। সেখানে মডারেশনের কাজ শেষে আবারও সিলগালা করে বের করা হয়। সেখান থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় প্রশ্ন প্রেসে যায়। প্রেস থেকে আসার পর পুলিশ প্রহরায় একটি কক্ষে তালাবদ্ধ রাখা হয়।
তিনি বলেন, পরীক্ষার দিন সকাল ১০টায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে ৯:২০ থেকে ৯:২৫ পর্যন্ত লটারি অনুষ্ঠিত হবে এবং সাড়ে ৯টায় কেন্দ্রে রিপোর্ট করা হবে। বিসিএসের ক্ষেত্রে ছয় সেটের মধ্যে একটি সেট লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়। আর নন-ক্যাডার বা দশম শ্রেণী এবং তার পরের জন্য চারটি সেট থাকে, সেখান থেকে লটারিতে একটি নেওয়া হয়।