বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের নমুনা টেস্ট করার নামে ‘ভুয়া’ রিপোর্ট দেয় জেকেজি হেলথ কেয়ার। এতে মামলা হয় ঐ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের চেয়্যারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও তার স্বামী আরিফের বিরুদ্ধে অভিযোগে দায়েরের পর যে মামলায় হয় সেই মামলায় ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে অন্যদেরকেও একই মেয়াদে সাজা দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। তবে রায়ের পর সাবরিনাকে আদালত থেকে বের করে আনা হলে তিনি স্বাভাবিক দেখা গেছে। এমনকি তিনি তার আত্মীয়দের ডাকে সাড়া দিয়েছেন এবং তাদের সাথে হাসিমুখে কথা বলেছেন।
কারাগারে দ’ণ্ডিত অন্য আসামিরা হলেন সাবরিনার স্বামী জেকেজি হেলথকেয়ারের নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরী, আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কারাগার থেকে তাদের আদালতে আনা হয়। এ সময় তাদের কারাগারের গরদ খানায় রাখা হয়। এরপর দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে তাদের আদালতে তোলা হয়। আদালত দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে রায় পড়া শুরু করেন।
মামলার প্রতিবেদনের সূত্রে জানা গেছে, জেকেজি হেলথকেয়ার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগ শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা না করেই ২৭ হাজার জনকে রিপোর্ট দেয়। এর বেশির ভাগই ‘ভুয়া’ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এ অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ জুন অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।
পরে ডা. সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুজনকেই গ্রে”প্তার করে ওই বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে সাবরিনা-আরিফসহ আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
২০২০ সালের ২০ আগস্ট আদালত অভিযুক্তদের মুক্তির অনুরোধ জানিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দেয়। বিচার চলাকালে মামলার ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন বিভিন্ন সময়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
গেল ১১ মে, অভিযুক্তরা আত্মপক্ষ সমর্থনে তাদের ‘নির্দোষ’ দাবি করে এবং ন্যায়বিচারের আশা করেছিলেন। গত ২৯ জুন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য ১৯ জুলাই দিন ধার্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী এক সময় চিত্র নায়িকা হতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার সেই ইচ্ছা অপূরন থেকেই যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ডাক্তার হন। তবে তিনি কয়েকজন কর্মকর্তাকে হাত করে তিনি নিজেকে একটি উচু স্তরে নিয়ে যায় বলে জানা যায়।