দিনাজপুর জেলার এক ব্যাক্তি পায়ে হেঁটে হজ পালন করতে যান এবং এরপর তার বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়। হাজী মহি উদ্দিন নামের সেই ব্যক্তি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। গত রবিবার অর্থাৎ ১০ অক্টোবর রাত ১২ টা ৩০ মিনিটে রামসাগর খসরুর মোড় নামক স্থানে তাঁর তৃতীয় কন্যার বসতবাড়িতে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। তার প্রয়ানকালে বয়স ছিল ১১৫ বছর।
আজ (সোমবার) অর্থাৎ ১১ অক্টোবর বাদ জোহরের পর রামসাগর জাতীয় উদ্যানের বায়তুল আকসা জামে মসজিদের সম্মুখ চত্বরে তার জানাজার দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তীতে তাকে রামসাগরের দীঘিপাড়ার পারিবারিক ক’বরস্থানে দা’ফ’নকার্য সম্পাদন করা হবে।
৯ নম্বর আশস্করপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া হাজি মহি উদ্দীনের প্রয়ানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হাজি মহি উদ্দীন দিনাজপুর সদর উপজেলার রামসাগর দিঘীপাড়া গ্রামের প্রয়াত ইজার পন্ডিত ও মমিরন নেছার ছেলে। তিনি জাতীয় উদ্যানের বায়তুল আকসা জামে মসজিদের সাবেক ইমাম।
১৯০৬ সালের ১০ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন মো. মহি উদ্দীন। ১৯৬৮ সালে হজ করার উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে দিনাজপুর থেকে রওনা দেন তিনি। পায়ে হেঁটে হজ করতে যেতে-আসতে তার সময় লেগেছিল ১৮ মাস। এ ১৮ মাসে তিনি পাড়ি দেন কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ। এ সময়ে তিনি সফর করেন ৩০টি দেশ। যে দেশগেুলো তিনি সফর করেছেন প্রয়ানের আগ পর্যন্ত মুখস্ত বলতে পারতেন সেসব দেশের নাম। ওই সময়ে হজে যেতে পাসপোর্ট ও ভিসা করতে তার খরচ হয় ১২০০ টাকা।
প্রয়ানকালে তিনি স্ত্রী, চার মেয়ে, দুই ছেলে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গত ১৯ আগস্ট ‘পায়ে হেঁটে হজ করা মহি উদ্দীনের বয়স এখন ১১৫, মনে আছে সব স্মৃতি’ শিরোনামে একটি সংবাদ মাধ্যমে ছবি, ভিডিও ও বয়সের প্রমাণপত্রসহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
উল্লেখ্য, মক্কায় হজ পালনের জন্য যখন বিশ্বের অধিকাংশ হজ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা বিমানে চড়ে যান, গাড়ি চড়ে যান, সেই সময় একজন ব্যাক্তি পায়ে হেটে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে, পায়ে হেঁটে পৌছে যান সৌদি আরবের মতো পবিত্রতম শহরে। তিনি বলেছিলেন যে, পথে তিনি মানুষের “বন্ধুত্বপূর্ণ” আচারন পেয়েছেন এবং তারা তাকে সমর্থন যুগিয়েছেন। তিনি ছিলেন একজন দৃঢ়চেতা মানুষ। তিনি দিনের বেশিরভাগ সময় এবং রাতে হাঁটতেন। তিনি মসজিদ, পাবলিক প্লেসগুলোতে বিশ্রাম নিতেন।