১০ হাজার টাকার প্যাকেজে খৎনার জন্য নাতি আয়ান আহমেদকে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু সুস্থ নাতির বদলে লাশ নিয়ে ফিরতে হলো। নাতির মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠার আগেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছয় লাখ টাকার নতুন বিল পরিশোধের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিশুটির দাদা।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে মহাখালীস্থ স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে শিশু আয়ানের দাদা আবদুস সালাম কবির এ অভিযোগ করেন।
আবদুস সালাম কবির বলেন, আমরা চাই আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। ইউনাইটেড মেডিকেল এন্ড হসপিটালস একটি খুব বড় এবং শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। তাদের মতো ঘটনা ধামাচাপা দিতে সবই করবে রাঘব-বয়াল। তারা এখনও আমাদের হুমকি দিচ্ছে। মাত্র ১০ হাজার টাকার প্যাকেজে ভর্তি হয়েছি। এখন আমাদের কাছে ৬ লাখ টাকা দাবি করা হচ্ছে।
একই কথা বললেন আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ। বললেন, আমার ছেলে মারা গেছে। আমরা তাকে খতনার জন্য ইউনাইটেডে নিয়ে যাই। তাদের তত্ত্বাবধানে আমার ছেলে মারা গেছে। তারা আমাদের না জানিয়ে পুরো বডি অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করছে। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তারা আমাদের কিছু না বলে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যান। তারা নিজ উদ্যোগে হাসপাতালে ভর্তি হন। এখন আমার ছেলের মৃত্যুর পর তারা প্রায় ছয় লাখ টাকা দাবি করছে। আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
তাদের চাপে রাখতে এই উদ্যোগ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা অয়ন হত্যার বিচার দাবি করছি। এ অবস্থায় তারা আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে, টাকার চাপে আমরা তার হত্যার বিচারের কথা ভুলে যাই।
ইউনাইটেড হাসপাতাল অয়নের চিকিৎসার জন্য ৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা বিল করেছে বলে জানা গেছে। তবে শিশুটিকে তার পরিবার নয়, ইউনাইটেড মেডিকেল কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এর আগে আয়ানের পরিবারের অনুমতিও নেওয়া হয়নি।
এ অবস্থায় অয়নের মৃত্যুর তদন্তের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল শাখার পরিচালকের কাছে টাকা ও হুমকির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। মইনুল আহসানের কাছে। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, এ মুহূর্তে আমার কাছে সংশ্লিষ্ট কোনো কাগজপত্র নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে কী চুক্তি করেছে তাও আমরা জানি না। আমাদের কোনো কাগজ নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের অতিরিক্ত বা অবৈধ বিল দাবি করলে তা অবশ্যই বেআইনি। নিয়ম বহির্ভূত কোনো টাকা দাবি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটি সংশ্লিষ্ট সবার সাক্ষ্য নেবে। ইতিমধ্যে তার বাবার সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তিনি যদি তদন্ত কমিটির কাছে এই অভিযোগ করে থাকেন এবং তদন্ত কমিটি তা সত্যতা পায় তাহলে অবশ্যই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।