গাড়িতে আগুন দেওয়ার দায়ে ১০ বছর আগে গুম হওয়া শাহীনবাগের বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের (সিএমএম) ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী এ রায় দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে বলেন, যারা পলাতক রয়েছে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অভিযোগে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৫ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালের সামনে একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেওয়া হয়। আগুন লাগার সময় চালক গাড়ির ভেতরেই ছিলেন।
তেজগাঁও থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি নেতা সুমনসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়। সাজেদুল ইসলাম সুমন ঢাকার শাহিনবাগ ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ডিসেম্বর ২০১৩ থেকে নিখোঁজ । পরিবারের অভিযোগ যে তিনি নিখোঁজের শিকার।
তিনি নিখোঁজ হওয়ার নয় মাস পর, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সুমনের বিরুদ্ধে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতকে জানান, সুমন ‘পলাতক’। তাই তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, আমার ভাইকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে সাক্ষীদের সামনে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে যদি কোনো মামলার আসামি করা হয়, তাহলে তারা কেন তাকে খুঁজে বের করতে পারেনি?
সানজিদা ইসলাম ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের সমন্বয়ক। গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এ সংগঠন গড়ে তোলেন তিনি।
বিএনপি নেতা সুমনের পরিবার জানায়, ওই দিন র্যাবের ইউনিফর্ম পরা কয়েকজন নিজেদের র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে সুমনকে তুলে নিয়ে যায়।
সানজিদা বলেন, আমরা তার খোঁজে বিভিন্ন থানায় গিয়েছি। কিন্তু কেউ একবারও বলেনি যে তার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত চলছে। যদি সত্যিই মামলা হয়ে থাকে তাহলে তাকে গ্রেপ্তার না করে কেন তুলে নেওয়া হলো? তাকেই আদালত সাজা দিয়েছেন।
এদিকে আগুন দেওয়া ওই প্রাইভেটকারের চালক জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তিনি কোনো মামলা করেননি।
গাড়িচালক জাহাঙ্গীর বলেন, আমি কাউকে গাড়িতে আগুন দিতে দেখিনি, আমি কেন কাউকে আসামি করে মামলা করব? তিনি বলেন, আমি ম্যাজিস্ট্রেটকেও একই কথা বলেছি। আমাকে একটি সাদা কাগজে থানায় আমাকে সই করানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের হওয়া তিন মামলায় ৪৯ বিএনপি নেতাকে সোমবার কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।