মোবাইল ফোন সেবায় করের বোঝা আরও বাড়ছে। শিগগিরই সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে ২৩ শতাংশে উন্নীত করতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, এ সংক্রান্ত প্রস্তাব ইতোমধ্যে সরকারের উচ্চপর্যায়ে এবং সংশ্লিষ্ট দুটি মন্ত্রণালয়ে অনুমোদিত হয়েছে। এখন প্রজ্ঞাপন জারি হলে তা কার্যকর হবে।
এর আগে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছিল। বর্তমানে ১০০ টাকার রিচার্জে কর ও অন্যান্য চার্জ কেটে গ্রাহকের হাতে থাকে ৪৫ টাকা ৪০ পয়সা। তবে শুল্ক আরও ৩ শতাংশ বাড়লে ১০০ টাকার রিচার্জে গ্রাহকের ব্যবহার উপযোগী টাকা নেমে আসবে মাত্র ৪৩ টাকা ৭০ পয়সায়।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, শুল্ক বাড়লে ১০০ টাকার রিচার্জে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ হিসেবে কাটা হবে ২৯ দশমিক ৮ টাকা, রেভিনিউ শেয়ার ও মিনিমাম ট্যাক্স হিসেবে কাটা হবে ৬ দশমিক ১ টাকা, এবং পরোক্ষ কর বাবদ কাটা হবে ২০ দশমিক ৪ টাকা।
বারবার মোবাইল সেবার খরচ বাড়ায় গ্রাহকরা বাধ্য হয়ে ইন্টারনেট খরচ কমিয়ে দিচ্ছেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে দেশে মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১৮ কোটি ৮৭ লাখ, যা জুন মাসের তুলনায় ৭৩ লাখ কম। একই সময়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটি ২৮ লাখে নেমে এসেছে, যা জুনের তুলনায় ৯৭ লাখ কম।
মোবাইল গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “ইন্টারনেট পরিষেবায় আমরা বিশ্বের তলানিতে অবস্থান করছি, কিন্তু করের ক্ষেত্রে আমরা শীর্ষে। দেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী এখনো ইন্টারনেট সেবার বাইরে। এই নতুন শুল্ক আরোপ জনগণকে আরও বেশি প্রযুক্তি বিমুখ করবে এবং ডিজিটাল বৈষম্য বাড়াবে।”
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে বিটিআরসি এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তারা প্রজ্ঞাপন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাদের ভাষ্য, “প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পরই এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা সম্ভব।”
এভাবে করের বাড়তি চাপ মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকে কতটা প্রভাবিত করবে, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।