ছোট পর্দার অভিনেত্রী হুমাইরা হিমুর মৃ’ত্যুর পর তার একটি পুরনো ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে বিগো লাইভ নামের একটি অ্যাপে এই অভিনেত্রীর উপস্থিতি দেখা গেছে।
সেই ভিডিও দেখে অনেকেই হিমুর সমালোচনা করেছেন। নানা প্রশ্নও উঠেছে। বিষয়টি নজরে এসেছে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ খ্যাত ছোট পর্দার বর্তমান সময়ের অভিনেত্রী ফারিয়া শাহরিনের।
তিনি তার ফেসবুকে হিমুর মৃ”ত্যু নিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন। যেখানে এই তারকা বোঝাতে চেয়েছেন, হতাশা, একাকিত্ব কতটা ভয়ংকর প্রভাব ফেলে আমাদের জীবনে।
ফারিয়া তার স্ট্যাটাসের শুরুতে লিখেছেন, ‘হিমু আপুর একটি ভিডিও দেখলাম, যেখানে তিনি লাইভে ডিগবাজি খাচ্ছেন। শুনলাম, ওই লাভ করলে নাকি পে করা হয়। কেন ভাই আপনারা কি পারেন না সব আর্টিস্টদের নিয়ে কাজ করতে? যাদের ভিউ আছে তাদের তো আছেই, পাশাপাশি যারা অভিনয়টা ভালোবাসেন তাকে ভালোবেসে অভিনয় যাদের জীবন তাদের সবাইকে কোনো না কোনো কাজ দিতে?’
হুমাইরা হিমুর মানসিক অবস্থা প্রসঙ্গে ফারিয়া শাহরিন বলেন, ‘‘কাল দেখলাম, আপুটার বাবা-মা, ভাই-বোন কেউ ছিল না, উনি কার কাছে মনের কথা বলতেন? ওনার সংসার কীভাবে চলতো, কীভাবে একা একা উনি সংসারে সার্ভাইভ করেছেন, খেয়ে-পরে বেঁচে ছিলেন তা কি কেউ ভাবছেন? নিশ্চয়ই অভিনয় থেকে সে যা প্রত্যাশা করে পায়নি বলেই এসব লাইভ করতেন, নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন, আয় করতেন! এটা আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু, তা আমি জানি না। কিন্তু একজন শিল্পী শুটিং নিয়ে থাকবেন এটাই তার কাজ, ওই কাজ যদি আপনারা নিয়মিত করতে না দেন দম আটকে আসার কথা, হতাশায় চলে যাওয়া খুব বেশি স্বাভাবিক। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা কেউ ভাবি-ই না।’
ক্যারিয়ার নিয়ে অনেকবার হতাশ হয়েছি জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘যারা সবাই ছবি শেয়ার করতেছেন, এরকম আরো অনেক আর্টিস্ট আপনাদের সাথে কাজ করতেছে, একটা কাজের ডাক পেতে প্রতিদিন তারা অপেক্ষা করেন। কিন্তু আপনারা শুধুমাত্র তাদের সাথে দৌড়ান যাদের মতামত আছে, অনেক ভিউ আছে। ভালো পরিচালক হলে তো ভিউ আপনাদের নির্দেশনার জন্যই আসবে, আর্টিস্ট তো পরের কথা। মাঝে মাঝে আমি হতাশ বোধ করি, আমি মনে করি আমি যা করছি, যা করার যোগ্য তা আমি করছি না, একটা গ্রুপই করে যাচ্ছে; তখন মনে হয়, আমারই ব্যর্থতা, আমিই কিছু পারি না। সুতরাং আমি আমার মতো থাকি। কিন্তু সবার জীবন তো আর এক না। এই দুনিয়াতে বেঁচে থাকাটা সবার কাছে এক না।’
সবাইকে সবার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ফারিয়া শাহরীন বলেন, ‘দয়া করে সকল শিল্পীকে কাজে লাগান। গতকাল থেকে আমার খুব খারাপ লাগছে। আমি এমন মৃত্যু দেখতে চাই না, দয়া করে সবাই পাশে দাঁড়ান।’