ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাঞ্ছারামপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী আলেক মিয়ার ছেলে শাহজালাল মিয়ার পূর্বধলার কান্দাপাড়া গ্রামের নবম শ্রেনীর এক মেয়ের সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহের আয়োজন করা হয়। শাহজালাল মিয়া তার বরযাত্রী নিয়ে হেলিকপ্টার যোগে বিয়ের উদ্দেশ্যে যান। তবে বিয়ে না করেই আবার নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। তবে তার এই ফিরে যাওয়ার কারন প্রতক্ষদর্শী ও পূর্বধলা উপজেলা প্রশাসনের বিবৃতিতে জানা যায়, বরের বয়স ৩০ হলেও মেয়ের বয়স ১৮ হয় নাই ফলে বিয়েটি একটি বাল্যবিবাহ ছিল।
একটি লাল প্রাইভেট হেলিকপ্টার ধীরে ধীরে মাটিতে নামার পর বিয়ের পোশাক পরিহিত ঐ যুবক বর নেমে আসে। বিয়ে করতে ও স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টারে চড়েছিলেন তিনি। কনের বাড়ির পাশের একটি স্কুল মাঠে হেলিকপ্টার অবতরণ করে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মমতা,বিয়ের ভাগ্যও খোলেনি। বউ ছাড়াই বাড়ি ফিরতে হলো। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ও পূর্বধলা উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, হেলিকপ্টারে আসা বরের নাম শাহজালাল মিয়া (৩০)।
সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাঞ্ছারামপুর গ্রামের আলেক মিয়ার ছেলে। পূর্বধলার কান্দাপাড়া গ্রামের নবম শ্রেণির ছাত্রী শাহজালাল মিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বরের বাবা আলেক মিয়া দুবাই থাকেন। সম্প্রতি ছেলের বিয়ে উপলক্ষে দেশে এসেছেন তিনি। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। এ জন্য শাহজালাল তার স্বজনদের সঙ্গে হেলিকপ্টারে করে কান্দাপাড়ায় কনের বাড়িতে যান। বিয়ের আয়োজন করতে গিয়ে একপর্যায়ে পূর্বধলা উপজেলা প্রশাসনের কাছে খবর আসে কান্দাপাড়ার মহাধুমধামে বাল্যবিবাহের আয়োজন করা হচ্ছে। এসময় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা পালিয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী কনের বয়স ১৮ বছর না হওয়ায় বিয়ে বাতিল করা হয়।
মহাধুমধামে শুরু হওয়া বিয়ের সব আয়োজনই বৃথা হয়ে গেল। বিয়ে না করেই চলে যেতে হলো বরের সাজে শাহজামাল মিয়াকে। পূর্বধলা থানার ওসি মো. শিবিরুল ইসলাম জানান, জন্ম সনদ অনুযায়ী কনের জন্ম ২০০৫ সালে। তার বয়স এখনো ১৮ বছর হয়নি। তাই বিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান, বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে তারা বিয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখেন, নিয়ম অনুযায়ী কনের বিয়ের বয়স হয়নি। পরে এই বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য: দক্ষিন এশীয়ার সংস্কৃতিতে সন্তানদের, বিশেষ করে মেয়ে সন্তানদের বিবাহের ব্যাপারে পিতা-মাতাই মূল প্রভাব বিস্তার করে থাকে। নারীদের বাল্যবিবাহ এমন একটি প্রথা যেটি নারীদের ঘিরে বহুদিন ধরে চলে আসা সামাজিক মূল্যবোধ ও অমসৃন অবস্থানকে প্রতিফলিত করে। পরিবারের সম্মান রক্ষার বিষয়ে নারীরা বোঝা হয়ে দাঁড়ায় এই চিন্তাধারাকে কেন্দ্র করে একটি মেয়ে শিশু যখন যৌবনপ্রাপ্ত হয় তখন তাদের পিতা-মাতা তখন তাদের সতীত্ব রক্ষার জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেন। তবে এইধরনের সংস্কৃতি বাংলাদেশের সামাজিক ব্যাবস্থা থেকে দূর করতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। এমনকি এই ধরনের কর্মকান্ড বর্তমান বাংলাদেশ আইনে শস্থিযোগ্য অপরাধ।