আল্লামা সাজিদুর রহমান বেশ কিছুদিন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব থেকে এবার পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পেলেন। আল্লামা নুরুল ইমলামের জিহাদীর প্রয়ানের পর দলটির মহাসচিবের পদটি শুন্য হয়ে পড়ে, এরপর দলের তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গেল ২৯ নভেম্বর তাকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্বে বসানো হয়। এই দলটিকে একটি অরাজনৈতিক দল হিসেবে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম এমন কোনো দল নয় যেটা রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে চলবে। হেফাজত ইসলাম দেশের রাজনীতির বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপে যাবে না। এই দলটি একটি অরাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের গঠন করবে।’
বুধবার রাজধানীর খিলগাঁওয়ের মাখজানুল উলুম মাদ্রাসায় নুরুল ইসলাম জিহাদীর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভার আগে পূর্ণকালীন মহাসচিব হিসেবে সাজিদুর রহমানের নাম ঘোষণা করেন হেফাজতের নায়েবে আমির আল্লামা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী।
সাজিদুর রহমান বলেন, ‘নুরুল ইসলাম জিহাদীর পথ অনুসরণ করে আগামীতে হেফাজতে কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যেতে চাই ইনশাআল্লাহ। আল্লামা শাহ আহমদ শফী হেফাজতকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক সংগঠন হিসেবে। তিনি বার বার বলে গেছেন, হেফাজতের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও নেই। শাহ আহমদ শফী, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, আল্লামা জিহাদীর পথ অনুসরণ করে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিকভাবে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। এই পথেই থাকবে ইনশাআল্লাহ।’
২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমীর প্রয়ানের পর হেফাজতের মহাসচিব হয়েছিলেন নুরুল ইসলাম জিহাদী। সে সময়কার হেফাজত আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর প্রয়ানে সংগঠনের প্রধান হয়েছিলেন আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
হেফাজত মহাসচিব বলেন, ‘আল্লামা নুরুল ইসলাম ইসলাম অবমাননার বিরুদ্ধে আইন পাস, কাদি’য়ানীদের অমুস’লিম ঘোষণা ও কা’রাবন্দি সকল আলেম-উলামাদ ও তৌহিদী জনতাকে মুক্তি দিতে হবে। হেফাজত একই দাবি করছে। থার্টি ফার্স্ট নাইট পালনের নামে দেশে অশ্লী’/ল’তা ও অপসংস্কৃতির প্রচলন করা হচ্ছে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ইমান আকিদা বিরো’ধী। তাদের অনিয়ন্ত্রিত বাজি ফোটানো এবং ফানুস উড়ানোর কারণে সাধারণ মানুষের জা’নমালের ক্ষতি হয়েছে।’
উল্লেখ্য, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ হলো মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের একটি ইসলামিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ। ২০১৩ সালে এই সংগঠনটি বাংলাদেশ সরকারের নিকট তাদের ১৩-দফা সনদ পেশ করার মাধ্যমে দাবি জানায়, যেখানে একটি ব্লাসফেমি আইন প্রণয়নের করার জন্য দাবি অন্তর্ভুক্ত ছিল। হেফাজতে ইসলাম ২০১০ সালে বন্দরংরী চট্টগ্রামের বেশ কিছু মাদ্রাসার শিক্ষক এবং ছাত্রদের সম্মিলিত ঐক্যের মাধ্যমে একটি গ্রুপ হিসেবে গঠিত হয়। ২০০৯ সালের “নারী উন্নয়ন নীতি” খসড়ার মাধ্যমে এই গঠনের সূত্রপাত হয়।