বৈধ মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করতে বিদ্যমান ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা ছাড়াও এবার আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেবে ব্যাংকগুলো। নতুন নিয়মে এখন থেকে বৈধ পথে বৈদেশিক আয় দেশে পাঠালে মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনা পাওয়া যাবে।
যদি কারেন্ট মুদ্রা বিনিময় হার ধরা হয়, তাহলে প্রবাসী আয় ব্যাংকে ১ মার্কিন ডলারের বিপরীতে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা পাওয়া যায়। সরকার এতে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেয়। এক ডলার ১১৩ টাকা ২৬ পয়সা। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যাংকগুলো এখন আরো আড়াই শতাংশ পরিশোধ করবে। ফলে এক ডলারে প্রবাসীরা পাবেন ১১৬ টাকার একটু বেশি।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেডা) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত রোববার (২২ অক্টোবর) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। এর আগে শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাতে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসী আয়ের টাকা বেশি দামে কিনতে হয় রেমিট্যান্স হাউস থেকে। নির্ধারিত মূল্যে ডলার পাওয়া যায় না। তাই ডলার সংকট কাটানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত।
নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রবাসীরা বৈধ উপায়ে রেমিটেন্স পাঠাতে আগ্রহী হবেন বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। তারা বলছেন, প্রণোদনা বাড়াতে হবে। নইলে ‘হুন্ডিওয়ালাদের’ সঙ্গ পাওয়া কঠিন হবে। তাদের মতে, তাঁদের মত, বাজারের ওপর ডলারের দাম ছেড়ে দেওয়াটাই হবে ‘যৌক্তিক সিদ্ধান্ত’।
তারা বলছেন, “বর্তমানে অনেক ব্যাংকই ডলার সংকটে রয়েছে। অনেকেই এলসি খুলতে পারছেন না। প্রবাসীদের আয় বাড়াতে এবিবি ও বাফেটার পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রবাসীদের আয় বাড়বে। ডলার সংকট কেটে যাবে।” ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো বাফেদা ও এবিবির নির্ধারিত হারের চেয়ে পাঁচ-ছয় টাকা বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনছে, ফলে প্রবাসী আয়ের ডলারের দাম বেড়েছে ১১৫-১১৬ টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনানুষ্ঠানিক পরামর্শেই ব্যাংকগুলো ডলারের এই দাম দিচ্ছে।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ডলারের বাজারে অস্থিরতা রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডলারের দাম ১১১ টাকা ছাড়িয়েছে। আর খোলা বাজারে ১২০ টাকা। আর ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখতে হিমশিম খাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে। গত এক সপ্তাহে রিজার্ভ কমেছে প্রায় ১১ কোটি ডলার। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ কমেছে ২১ বিলিয়ন বা ২ হাজার বিলিয়ন ডলার।
সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফজাল করিম গণমাধ্যমে জানান, বৈঠকে ডলার বাজারের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্যাংক নিজস্ব আয় থেকে প্রবাসীদের ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেবে। এটি আবার আমদানিকারকদের থেকে নেওয়া যাবে না।