বগুড়ার সন্তান হিরো আলম নানা সময়ে নানা ভাবে তার কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। তিনি সেখানে একজন ডিশ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। এরপর তিনি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ এর মাধ্যমে পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি মিডিয়াগুলোর প্লাটফর্মে নানা ধরনের কৌতুক বা ঐ জাতীয় কনটেন্ট পোস্ট করার মাধ্যমে পরিচিতি পান। তিনি বিভিন্ন সময়ে অভিনয়, প্রযোজনা কিংবা সংগীতকে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে নিজের মত করেই উপস্থাপন করেছেন। তার কাজ নিয়ে একের পর এক শুরু হতে থাকে আলোচনা-সমালোচনা।
বগুড়ার যুবক আশরাফুল আলম। সবার কাছে তিনি হিরো আলম নামে পরিচিত। অভিনয়, প্রযোজনা, সঙ্গীতকে নিজের মতো করে নিয়ে আসেন। তার কাজ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। তবে এ বিষয়টিকে পাত্তা দিচ্ছেন না হিরো আলম। দুদিন পর পর বেসুরো বিভিন্ন গান গেয়ে তার ইউটি”উব চ্যানেলে প্রকাশ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার জনপ্রিয় রবীন্দ্রসংগীত ‘আমার পরানে যাহা চাই’ গেয়ে তোপের মুখে পড়েছেন তিনি।
রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ার পর বিভিন্ন মানুষ নানাভাবে তাকে নিয়ে সমালোচনা করেন। প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তরুণ কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার মণি চৌধুরী তাদের একজন। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফে”সবুকে তার একটি প্রতিবাদী স্ট্যাটাস সাড়া ফেলে।
বুধবার (২৭ জুলাই) হিরো আলম আর কখনো রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুলের গান গাইবেন না বলে অঙ্গীকার করে মুচলেকা দিয়েছেন। তার এই বোধদয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সেই মণি চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সুস্থ সংস্কৃতির জন্য এটা দারুণ খবর। হিরো আলমের মতো যারা অপসংস্কৃতির চর্চা করছে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি।
মণি চৌধুরী আরও বলেন, ‘এরপর ফে”সবুকে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আমি একজন সুরকার. গান আমার সন্তান। কেউ ভুলভাবে উপস্থাপন করলে প্রতিবাদ করা আমার দায়িত্ব। আমি তাই করেছি। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের সুস্থ সংস্কৃতির জন্য সুখবর যে হিরো আলম বিকৃত সাংস্কৃতিক চর্চা থেকে বেরিয়ে আসবেন।
হিরো আলম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অ”শ্লী/’ল অঙ্গভঙ্গি, ভাঁড়ামি কিংবা বিকৃত কোনো কিছুর চর্চা করে কিছু লোককে হাসানোর মধ্যে আমি আসলে কোনো সৃজনশীলতা খুঁজে পাই না। মানুষ মূল্যায়ন করে যে তারা কতটা সৃজনশীল। আমি তার মধ্যে তার প্রচেষ্টার প্রশংসা করার মতো কিছু খুঁজে পাইনি।’
তিনি আরও বলেন, হিরো আলমের সঙ্গে অতীতে আমার কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ ছিল না। আমি তার অপসংস্কৃতি চর্চার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। বিকৃত সাংস্কৃতিক চর্চার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সকলকেই করতে হবে। আমিও তাই করেছি। তার সঙ্গীত বা অন্যান্য কন্টেন্ট সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই। যা বলবেন সেটা বলবেন দর্শকরা। আজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলেছেন। হিরো আলমের প্রতি আমার কোনো পরামর্শ আগেও ছিল না, এখনো নেই। পরামর্শ সবার জন্য নয়।
মণির সংযোজন, এটা সত্য যে শুধু হিরো আলম নয়, অনেকেই এই ধরনের অপসংস্কৃতির চর্চা করছেন। কিন্তু আমার মনে হয়, হিরো আলমকে কেউ ছাড়াতে পারেনি। যারা ইউটি’উব, ফে”সবুকে অপসাংস্কৃতিক কন্টেন্ট তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
মণি চৌধুরীর লেখা প্রায় ১৭টি গান প্রকাশিত হয়েছে। আরও কয়েক ডজন গান মুক্তির অপেক্ষায়। একক ও দ্বৈত গানসহ তাঁর গাওয়া প্রকাশিত গানের সংখ্যা প্রায় ২৬টি।
উল্লেখ্য, হিরো আলম এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। কিন্তু তারপরও তার বোধোদয় না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাকে ডেকে পাঠিয়ে মুচলেকা নিয়েছেন। এতে করে হিরো আলম অঙ্গীকার করেছেন যে, তিনি আর রবীন্দ্র সংগীত এবং নজরুল সংগীত গাইবেন না।