ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) জানিয়েছে, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে মুসলিমদের সংখ্যাই বেশি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
বিএসএফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ সময়ে ৭১৬ জন বাংলাদেশি সীমান্তে ধরা পড়েছেন, যাদের মধ্যে ৪১৫ জন মুসলিম এবং ৩০১ জন হিন্দু। তবে, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সময়ে অনুপ্রবেশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি।
সীমান্তে আটক হওয়া হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদের অনেকেই বলেছেন, বাংলাদেশে তাদের ওপর নির্যাতন এবং সহিংসতার আশঙ্কায় তারা দেশ ছেড়েছেন। তবে বিএসএফের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সংখ্যা এক বা দুই শতাংশের বেশি নয়।
এক বিএসএফ কর্মকর্তা বলেন, “বাংলাদেশিদের জন্য ভারতের ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া কঠোর হওয়ায় অনেকেই অবৈধ উপায়ে প্রবেশের চেষ্টা করছেন। তবে সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।”
২০২৩ এবং ২০২২ সালের একই সময়ের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে সামান্য বেড়েছে। ২০২৩ সালে ২০৩ জন হিন্দু এবং ৪৪৯ জন মুসলিম ধরা পড়েন, যেখানে ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ১১৪ জন হিন্দু এবং ২৯৮ জন মুসলিম।
ভারতীয় সংস্থা ‘ক্যাম্ব’ এর আহ্বায়ক মোহিত রায় মনে করেন, অনুপ্রবেশকারীরা অনেক সময় প্রকৃত কারণ লুকিয়ে সুবিধাজনক উত্তর দিয়ে থাকেন।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, “বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের ব্যাপক পলায়নের যে আখ্যান চালানো হচ্ছিল, বিএসএফের এই পরিসংখ্যান তা নস্যাৎ করেছে। ধরা পড়া সংখ্যা খুবই কম এবং তা দিয়ে কোনো বড় ধরনের সংকট প্রমাণিত হয় না।”
বিএসএফ জানিয়েছে, তারা সীমান্তে অতিরিক্ত নজরদারি এবং নিরাপত্তা জোরদার করেছে। তবে, ধরা পড়া সংখ্যা আসল অনুপ্রবেশকারীদের প্রকৃত চিত্র নয়, কারণ অনেকেই হয়তো নজর এড়িয়ে প্রবেশ করেছেন।
এই পরিসংখ্যান হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রচারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।