Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / opinion / হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে না চাইলেও ক্ষমতা তাকে ছেড়ে চলে যাবে: নেপথ্যের গুরুতর কারন জানালেন পিনাকী

হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে না চাইলেও ক্ষমতা তাকে ছেড়ে চলে যাবে: নেপথ্যের গুরুতর কারন জানালেন পিনাকী

বর্তমান সময়ে রাজনীতিতে একটি ভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি দেখা দিচ্ছে, যার মূল কারণ হচ্ছে রিজার্ভের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং বৃদ্ধি দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধি। তবে এই দুটি বিষয় দেশের মানুষের জীবন ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। রিজার্ভের পরিমাণ ব্যাপক হারে কমে যাওয়ায় দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমল অস্থিরতা বিরাজ করার সম্ভাবনা দেখা দিটে পারে। এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বছর খানেক পরেই, আর এই সকল বিষয়গুলোর সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এবার এ বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন সমালোচক পিনাকী ভট্টাচার্য। তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকেই আমি রিজার্ভ সংকটের কথা বলে আসছি। আমি আনন্দিত যে আজ দশ মাস পরে অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক সহ অনেকেই এ বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন।

যে কথাটা আমি বলে আসছি তা হল বর্তমান ট্রেন্ড বজায় থাকলে খুব শিগগিরই রিজার্ভ একটা বিপদসীমায় পড়ে যাবে যখন কোন কিছুই আর হাসিনার নিয়ন্ত্রনে থাকবে না। এরকম একটা অবস্থায় হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে না চাইলেও ক্ষমতা তাকে ছেড়ে চলে যাবে।

যেকোনো একটি ঘটনার কারণ বিশ্লেষণ করার মেথডলজির একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ডিরেক্ট কজ এবং ইনডিরেক্ট কজ আইডেন্টিফাই করা। যেমন দ্বিতীয় মহাযু”দ্ধের ডিরেক্ট কজ ছিল হিটলারের পোল্যান্ড আ’ক্র/মণ। কিন্তু তার আগে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা যেমন ভার্সাই চুক্তিতে জার্মানির উপর অপমানজনক শর্ত চাপিয়ে দেওয়া, তিরিশের দশকে বিশ্ব অর্থনীতির মহামন্দা, লীগ অফ নেশনসের পতন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নেভিল চেম্বারলিনের হিটলারকে তোষণ ইত্যাদি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযু”দ্ধের ইনডিরেক্ট কজ। প্রকৃতপক্ষে এগুলোই ছিল দ্বিতীয় বিশ্ব যু”দ্ধের প্রধান কারণ। এ ঘটনা গুলো না ঘটলে সম্ভবত হিটলারের উত্থানই হতো না।।

একইভাবে, হাসিনার আসন্ন পতনের ডিরেক্ট কজ বিপুল অর্থনৈতিক চাপের মুখে তার সরকার যে ব্যবস্থাগুলো নেবে তা বাংলাদেশের মানুষের সহ্য সীমার বাইরে চলে যাবে। সেই পরিস্থিতিতে তার পক্ষে ক্ষমতা ধরে রাখা আর সম্ভব হবে না। তার পতনের ইনডাইরেক্ট কজ গুলোর মধ্যে আছে গণতন্ত্র হ/”ত্যা, নির্বাচন ব্যবস্থা সহ দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বং/”স, মানবাধিকারের চরমতম লঙ্ঘ”ন, অদৃষ্টপূর্ব স্কেলে দুর্নীতি। এসব ইনডিরেক্ট কজ সত্বেও হাসিনা তার অপকর্ম এতকাল চালিয়ে যেতে পেরেছে তার একটা প্রধান কারণ হচ্ছে তার হাতে থাকা মোটামুটি ভালো পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এখনই রিজার্ভের পরিমাণ এমন একটা আন্সাসটেইনেবল অবস্থায় চলে যাচ্ছে যে হাসিনা আর পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে না। সুতরাং রিজার্ভের এই পতন হাসিনা সরকারের পতনের একটা বড় ইনডিরেক্ট কাজ।

জিয়া হাসান রিজার্ভের বিষয়ে আমরা অবস্থানের একটা ক্রিটিক ফে”সবুকে দিয়েছেন এবং তাকে এজন্য আমি স্বাগত জানাই। আমার কনক্লুসনের সাথে তার কনক্লুশনের ফান্ডামেন্টাল কোন ভিন্নতা নেই। তবে মেথডলজির ভিন্নতা আছে। তিনি রিজার্ভের কারণে হাসিনা সরকারের সম্ভাব্য সংকোচন মূলক নীতির কারণে জনগণের ওপর যে দুর্ভোগ নিয়ে আসবে সেটাকে হাসিনার পতনের কারণ হিসেবে মনে করছেন। আমিও বলেছি রিজার্ভ পতনের একটা পর্যায়ে গিয়ে হাসিনা সব কিছুর উপরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে। তবে এটা হবে হাসিনা পতনের ডিরেক্ট কজ। রিজার্ভের বিপ’/দজ”নক পতন একটা প্রধান ইনডিরেক্ট কজ, এবং সম্ভবত সবচাইতে পটেন্ট কজ।

জিয়া হাসানের সাথে একটা বিষয়ে আমার দ্বিমত আছে। জিয়া বলছে এক্সটার্নাল সমস্যাগুলো হাসিনা সামাল দিতে পারবে। আমি তা মনে করি না। যেমন ধরেন দুনিয়ার প্রধান প্রধান কারেন্সির বিপরীতে ডলারের দাম সম্প্রতি বেশ বেড়েছে। এর কারণ হচ্ছে আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে। সুতরাং ডলারের মূল্য বৃদ্ধি এটাকে হাসিনা কি করে সামাল দেবে? ওপেক তেল উৎপাদনের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির যে দাম বাড়বে এবং যার ফলে বাংলাদেশের জ্বালানির জন্য যে আমদানি খরচ বৃদ্ধি সেটা হাসিনা কীভাবে সামলাবে?

পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোতে একটা অর্থনৈতিক মৃদুমন্দা আসন্ন। তার ফলে আমাদের রপ্তানির চাহিদা কমে গেলে এবং আল্টিমেটলি রপ্তানি আয় কমে গেলে হাসিনা কি করে তা ট্যাকেল করবে? টাকার বিনিময় মূল্য ক্রমাগত অস্থিতিশীল থাকলে প্রবাসীরা সরকারি মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠাতে নিরুৎসাহিত হবেন। এটাই বা হাসিনা কী করে সামলাবে? সে কারণে আমি বারেবারে বলেছি, হাসিনার হাতে কোন ম্যাজিক অবশিষ্ট নেই। দেশে যে ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে তার সামনে সে অত্যন্ত অসহায়।

প্রসংগত, একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে সাধারণ একজন ব্যক্তি যে বিষয়টি বুঝতে পারে সেটা হল একটি সরকারের পতনের জন্য খুব বেশি কিছু দরকার হয় না। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, দেশে রিজার্ভের পরিমাণ কমে যাওয়া, জনগণকে ন্যূনতম সুবিধা প্রদান করতে না পারা ছাড়া অল্প কিছু বিষয়, যেগুলো একটি সরকারকে পতনের দিকে ঠেলে দিতে পারে এবং জনগণের উপর থেকে আস্থা হারাতে পারে সেই সরকার। সে দিক থেকে বর্তমানে বাংলাদেশের যে সরকার রয়েছে, তারা এখনই এ সকল সমস্যার যদি সমাধান করতে না পারে, তাহলে ব্যাপক চাপের মুখে পড়তে পারে সরকার, যেটা অনেকটা অবশ্যম্ভাবী।

About bisso Jit

Check Also

আগামীকাল ক্যান্টনম্যান্টে হামলার পরিকল্পনা করেছে আঃলীগ, মিটিংয়ের ভিডিও আসছে: ইলিয়াস হোসেন

ড. বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল শীঘ্রই মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতে খুব …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *