Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / opinion / হাসিনা অনেক সময় নষ্ট করেছে, আপদ দ্রুত বিদায় হলে কাজটা শুরু করতে পারবো : পিনাকী

হাসিনা অনেক সময় নষ্ট করেছে, আপদ দ্রুত বিদায় হলে কাজটা শুরু করতে পারবো : পিনাকী

একজন মানুষ সমাজে বড় সাধারনভাবে হতে পারেন না, এর জন্য তাকে বিশেষ একজন হতে হয়। তবে এই বিশেষ হওয়াটা অতটা সহজ নয়। তবে অনেক সময় অনেকটা দৈবিক বা অলৌকিকভাবে কেউ কেউ বিশেষ হয়ে যান। সেখানেও থাকে কার্য-কারন সম্পর্ক। মানুষ সমাজে নানা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে থাকে, সেটা স্বাভাবিক। অনেক সময় মানুষ যেটা কখনও আসবে না জীবনে এমনটা মনে করে, সেটাও অনেক সময় এসে পড়ে। তাই জীবনে হতাশা এবং কষ্টগুলোকে দূরে ঠেলে দেওয়া উচিৎ। এবার এ বিসয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন পিনাকি ভট্টাচার্য। তার পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-

দুঃখ, ক্লেশ, বাধা, বিপদ, অপমান, বেদনা কোনটাই অভিশাপ না, এগুলো ব্লেসিংস। যার জীবনে এসব নাই সে দুনিয়াকে কিছু দিতে পারেনা। আপনাকে প্রত্যাখ্যাত হতে হবে, নিরন্তর দুঃখের মোকাবেলা কর‍তে হবে, প্রতারিত হতে হবে, বিপদের মুখোমুখি হতে হবে তাহলেই আপনি গড়ে উঠবেন, আপনাকে এগুলোই শক্তিমান করে তুলবে।
এসব কথা নতুন নয়। সব ধর্ম আমাদের এই শিক্ষা দিয়েছে। আমি মাঝে মাঝে নিজের জীবনকে নিয়ে ভাবি। আমার জীবনটা যেকোন মুহুর্তেই নিস্তরঙ্গ হয়ে যেতে পারতো। শুধু একটা সিদ্ধান্তই আমার জীবনকে একটা দিকে চালিত করতে পারতাম। একজন কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ হয়ে, একজন সফল চিকিৎসক হিসেবে, একজন লেখক হিসেবে, আজকেও একজন সফল ফরাসী নাগরিক হিসেবে বাকী জীবন কাটিয়ে দিতে পারতাম। কিন্তু আমার কুড়কুড়ানি আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। আমি দেখতে চাই আমার আশেপাশের মানুষের জীবন সুন্দর। কষ্ট নেই, দারিদ্র্য নেই, না পাওয়ার বেদনা নেই, সকলের জীবন সম্ভাবনায় ভরপুর। আমার সমস্ত শান্তি নষ্ট হয়ে যায় মানুষের কষ্ট দেখলে।
আমার বাসার সামনে একজন ক্লোসা দাঁড়িয়ে থাকে। নাম এরিক, আমার বন্ধু। ক্লোসা হচ্ছে এমন মানুষ যে নিজেকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়েছে। কেউ কিছু দিলে খায়, সারাদিন মদে চুর হয়ে থাকে। এরিক একজন সুখী মানুষ। এরিক জানে আমি কখন ফিরবো। কখনো কফি, কখনো এক বোতল পানি, কখনো একটা স্যান্ডুইচ চায়। কিনে দেই। ওর পেট ভরা থাকলে আপনি চাইলেও কিছু নেবে না। একদিন লজ্জা ফেলে মদ চেয়েছিলো। আমি কিনে দিয়েছিলাম, বলেছিলাম এটাই শেষ আর কখনো চেয়োনা। আর চায়নি। ওকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম তুমি কি সুখী? আমাকে উলটো জিজ্ঞাসা করেছিলো সুখ কী? আমি বলেছিলাম তোমাকে যখন কিছু কিনে দেই সেইটা একটা সুখ। এরিক হেসেছিলো। সপ্তাহের বাজার যেটাকে মাকশে বলে সেইখানে কিছু দরিদ্র মানুষ আসে, বেশীরভাগই বয়ষ্কা মহিলা। কখনো বলে, দুটো ডিম কিনে দাও, কেউ বলে একটা রুটি কিনে দাও। কিনে দেই, এইটাও সুখ। মনে হয় আমার জীবনটা সার্থক, কারো সামান্য হলেও কাজে লাগলাম। কিন্তু এভাবে তো জনে জনে সাহায্য করে সমাজের সব দুঃখ দূর করা যাবেনা।
যেভাবে সমাজের দুঃখ দূর করা যাবে সেই কাজটা যতোদিন করতে না পারছি ততোদিন আমার শান্তি নাই। কাজটা খুব কঠিন না। সবার খুব বেইসিক চাহিদা পুরণ করার মতো সামর্থ্য এই পৃথিবীর আছে। আমি জানি আমি এই কাজটা করতে পারবো। আমার ভিতরে কুড়কুড়ানি যিনি দিয়েছেন তিনি আমাকে কামিয়াব হবার শক্তিও দেবেন। কাজটা একা করা যাবেনা। বাংলাদেশের জন্য তো হাজার খানেক লোক লাগবেই, কর্মঠ, হৃদয়বান, সাহসী, মেধাবী আর নির্লোভ মানুষ। আমার বিশ্বাস এমন মানুষ পাবো। আমার সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। আর বড় জোর পনেরো বছর কাজ করতে পারবো। হাসিনা অনেক সময় নষ্ট করেছে আবার এটাও ঠিক হাসিনার শাসন আমাকে তৈরিও করেছে। যত দ্রুত এই আপদ বিদায় হয় ততোই ভালো। কাজটা শুরু করতে পারবো তাড়াতাড়ি।

প্রসংগত, শেখ হাসিনা সরকার প্রধান হয়ে অনেক সময় নিজের দলের অনেক নেতাকর্মীদের অন্যায়ও মেনে নিতে বাধ্য হন, কারণ সেটা একটি দল। সমালোচনা ও দলের নাজুক পরিস্থিতি থেকে দলকে রক্ষা করতে অনেক সময় অন্যায়কেও সমর্থন দিতে হয়। তবে সেটা তীব্র হলে এবং দলের প্রধান সমর্থন দিলে সেটা দলের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না। তবে দল বলে যেখানে কথা সেখানে দল বাঁচাবে দলের নেতারা এটাই স্বাভাবিক।

About bisso Jit

Check Also

আগামীকাল ক্যান্টনম্যান্টে হামলার পরিকল্পনা করেছে আঃলীগ, মিটিংয়ের ভিডিও আসছে: ইলিয়াস হোসেন

ড. বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল শীঘ্রই মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতে খুব …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *