২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কর্নেল আবদুল হক। তার দাবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতা দৃঢ় করতে ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল।
এক সাক্ষাৎকারে কর্নেল হক বলেন, “হাসিনা যেন ক্ষমতায় নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া যায়, সেই উদ্দেশ্যেই ভারত এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সেনাবাহিনীর ৫৭ জন কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে মূলত বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, ‘আমরা যখন চাই, তোমাদের দমন করতে পারি।'”
তিনি আরও বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতারা সরাসরি জড়িত ছিলেন। মঈন উদ্দিন আহমেদ ও মঈন ইউ আহমেদ সরাসরি না হলেও, পরোক্ষভাবে এ ঘটনার জন্য দায়ী।”
তার মতে, শুরুতে মঈন ইউ আহমেদের উদ্দেশ্য ভালো ছিল—দেশের অস্থিরতা দূর করা। তখন শতভাগ জনগণ তার পক্ষে ছিল এবং সবাই পরিবর্তন চেয়েছিল। কিন্তু পরে যখন তার লক্ষ্য থেকে সরে যাওয়ার বিষয়টি জনগণের সামনে স্পষ্ট হলো, তখন তারা বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়। সেই সুযোগটাই কাজে লাগান শেখ হাসিনা।
কর্নেল হক বলেন, “হাসিনা নিজেই একবার বলেছিলেন, ‘১/১১ আমাদেরই তৈরি’ এবং সবাইকে তিনি ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। এরপরই মঈন ইউ আহমেদকে দীর্ঘ সময় সেনাপ্রধান হিসেবে রাখেন।”
তার মতে, “এটি ছিল পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে ধ্বংস করা। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অনেকেই বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছে, আর হাসিনা এবং নরেন্দ্র মোদি এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত।”
তিনি আরও জানান, “এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছে, যারা দৃঢ়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমি আশাবাদী যে, প্রকৃত সত্য একদিন উন্মোচিত হবে এবং ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে।”
নিজের ভাগ্য সম্পর্কে কর্নেল হক বলেন, “আমি নিজেও ওই হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে পারতাম, কারণ আমার পোস্টিং অর্ডার ছিল বিডিআর-এ। কিন্তু আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন, আমার পোস্টিং অর্ডার বাতিল হয়েছিল। আর এই বেঁচে থাকার জন্য আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে—সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা।”